দাবা খেলার বিস্তারিত !!!

  


দাবার গুটি পরিচিতি

দাবা খেলার প্রধান হাতিয়ার হলো গুটি। তাই দাবা খেলতে চাইলে অবশ্যই এর গুটিগুলো চিনতে হবে। ইংরেজিতে যাকে বলে পিস (Piece)। একটি দাবার সেটেঃ

  • ৬ ধরনের গুটি থাকে।
  • গুটিগুলো বোর্ডের রঙের সাথে মিলিয়ে দুই ভাগে বিভক্ত থাকে। সাধারণত গুটির রঙ সাদা ও কালোই হয়ে থাকে।
  • মোট গুটির সংখ্যা ৩২।
  • প্রতি দলে ১৬ টি করে গুটি থাকে।
দাবার গুটি পরিচিতি
সূত্রঃ Frank A Camaratta

উপরের চিত্রে বাম থেকে গুটিগুলোর নাম হলোঃ 

সৈন্য 

সৈন্যকে অনেকে ‘বড়ে’ নামেও সম্বোধন করে। এর ইংরেজি নাম পন (Pawn)। প্রতি দলে ৮টি সৈন্য থাকে। প্রতি সৈন্যের মূল্য ১ পয়েন্ট।

দাবা খেলার গুটিঃ সৈন্য
চিত্রঃ সৈন্যের প্রতীক

নৌকা

এর ইংরেজি নাম রুক (Rook)। প্রতি দলে দুইটি করে নৌকা থাকে। প্রতিটি নৌকার মূল্য ৫ পয়েন্ট।

দাবা খেলার গুটিঃ নৌকা
চিত্রঃ নৌকার প্রতীক

ঘোড়া 

এর ইংরেজি নাম নাইট (Knight)। প্রতি দলে দুইটি করে ঘোড়া থাকে। প্রতিটি ঘোড়ার মূল্য ৩ পয়েন্ট। 

দাবা খেলার গুটিঃ ঘোড়া
চিত্রঃ ঘোড়ার প্রতীক

হাতি

এর ইংরেজি নাম বিশপ (Bishop)। এটিও প্রতি দলে দুইটি করে থাকে। প্রতিটি হাতির মূল্য ৩ পয়েন্ট। 

দাবা খেলার গুটিঃ হাতি
চিত্রঃ হাতির প্রতীক

মন্ত্রী

এটি ইংরেজিতে রাণী বা কুইন (Queen) হিসেবে পরিচিত। কিন্তু বাংলায় মন্ত্রী হিসেবে পরিচিত। এটিই দাবা খেলার সবচেয়ে শক্তিশালী গুটি। প্রতি দলে মাত্র একজন মন্ত্রী থাকে। মন্ত্রীর মূল্য ৯ পয়েন্ট। 

দাবা খেলার গুটিঃ মন্ত্রী
চিত্রঃ মন্ত্রীর প্রতীক

রাজা 

এর ইংরেজি নাম কিং (King)। রাজা হলো যেকোনো দলের প্রধান গুটি। এটি দাবা খেলার একমাত্র গুটি যেটিকে কখনো কাটা যায় না। রাজা আটকে পড়লেই খেলা শেষ হয়ে যায়। স্বভাবতই প্রতি দলে মাত্র একজন রাজা থাকে। রাজার মূল্য অসীম। 

দাবা খেলার গুটিঃ রাজা
চিত্রঃ রাজার প্রতীক

 

দাবার বোর্ড পরিচিতি 

অন্যান্য বোর্ড গেম (Board Game) এর মতই দাবারও একটি নির্দিষ্ট বোর্ড বা ছক রয়েছে। দাবার বোর্ডে দৈর্ঘ্য বরাবর ৮টি এবং প্রস্থ বরাবর ৮টি ঘর রয়েছে। পুরো বোর্ডে সব মিলিয়ে ৮*৮ = ৬৪টি ঘর রয়েছে। এই ৬৪টি ঘর দুই রঙে বিভক্ত। ৬৪টি ঘরের মধ্যে ৩২টি ঘর গাড় রঙের এবং ৩২টি ঘর হালকা রঙের। রঙ দু’টি যেকোনো রঙ হতে পারে। যেমন গাড় সবুজ ও সাদা। গাড় লাল ও সাদা। কিন্তু সাধারণত সাদা কালো রঙের বোর্ডই বেশি দেখা যায়। দাবার বোর্ড কাঠ, প্লাস্টিক, কাচ অনেক কিছু দ্বারাই তৈরি হয়ে থাকে।

দাবার বোর্ড পরিচিতি
সূত্রঃ Istock

উপরের ছবিটি একটি কাঠের দাবার বোর্ডের ছবি। এই ছবিটি খেয়াল করলে দেখতে পাবেন যে বোর্ডের নিচের দিকের সবচেয়ে ডানের ঘরটি সাদা। আবার একই ভাবে উপরের দিকে সবচেয়ে বামের ঘরটি সাদা। অর্থাৎ প্রত্যেক খেলোয়াড়ের সামনে বোর্ড এমন ভাবে থাকবে যাতে একদম প্রথম সারিতে সবচেয়ে ডানের ঘরটি সাদা থাকে। এটিই বোর্ড বসানোর সঠিক উপায়।

এই ছবিটিতে আরো একটি বিষয় লক্ষ্যণীয়। বোর্ডের নিচের দিকে A থেকে H পর্যন্ত বর্ণ লেখা আছে। আবার বাম দিকে ১ থেকে ৮ অবধি সংখ্যা রয়েছে। এগুলো দিয়ে আসলে বোর্ডের কলাম ও সারি নির্দেশ করে। বর্ণগুলো প্রতিটি কলামকে নির্দেশ করে। সংখ্যাগুলো প্রতিটি সারিকে নির্দেশ করে। এর মাধ্যমে প্রতিটি ঘরকে আলাদা করে চিহ্নিত করা যায়। যেমন C3 মানে সি কলামের ৩ নং ঘর। আবার F8 মানে এফ কলামের ৮ নং ঘর। সাধারণ খেলোয়াড়রা এসব মাথায় না রাখলেও টুর্নামেন্টে এর অনেক গুরুত্ব রয়েছে। বিশেষত খেলার রেকর্ড রাখার সময় এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। অভিজ্ঞ খেলোয়াড়রা এর মাধ্যমে মৌখিক চালও দিতে পারেন। নিচের চিত্র দেখলে বিষয়টি আরো পরিষ্কার হবে। 

দাবার বোর্ডঃ ক্রমানুসারে
সূত্রঃ Dummies

তবে বোর্ড সম্পর্কে মজার একটি তথ্য না দিলেই নয়। ইতিহাস মতে উত্তর ভারতের এক প্রজা এই খেলাটি আবিষ্কার করে রাজাকে দেখিয়েছিলেন। রাজা খুশি হয়ে তাকে অনেক স্বর্ণ-রৌপ্য দিতে চাইলে তিনি না করেন। অতঃপর পুরষ্কারস্বরুপ এই বোর্ড ভর্তি শস্যদানা চান। তবে তার শর্ত ছিলো প্রথম ঘরে একটি শস্যদানা দিতে হবে। পরবর্তী ঘরে দু’টি। তার পরের ঘরে চারটি। কিন্তু বস্তুত এভাবে প্রতি ঘরে শস্যদানার সংখ্যা দ্বিগুণ করে দিতে চাইলে যে পরিমাণ শস্য প্রয়োজন তা উৎপাদনই এক কথায় অসম্ভব। এর দ্বারা বুঝতেই পারছেন দাবা ও দাবার ছকের সাথে গণিতের যোগসূত্র কতটুকু।

দাবার গুটি বোর্ডে সাজানোর নিয়ম 

ইতোমধ্যে আপনারা দাবার গুটি এবং দাবার বোর্ড সম্পর্কে জেনেছেন। দাবা খেলা এ দুটির সমন্বয়েই হয়ে থাকে। এবার চলুন জানা যাক কিভাবে দাবার বোর্ডে গুটি সাজাতে হয়।

  • বোর্ডের একদম নিচের সারিতে সবার বামে একটি নৌকা বসান।
  • তার পাশের ঘরটিতে একটি ঘোড়া বসান।
  • তার পাশের ঘরটিতে একটি হাতি বসান।
  • বোর্ডের ডান দিকের ঘরগুলোতে ঠিক একই ভাবে ক্রমান্বয়ে নৌকা, ঘোড়া ও হাতি বসান।
  • আপনার গুটিগুলো সাদা হলে কালো ঘরে রাজা ও সাদা ঘরে মন্ত্রী বসান। আপনার গুটি কালো হলে সাদা ঘরে রাজা ও অপর ঘরে মন্ত্রী বসান।
  • অতঃপর দ্বিতীয় সারির ৮টি ঘরেই সৈন্য বসিয়ে দিন।
দাবার গুটি বোর্ডে সাজানোর নিয়ম

দাবার চাল দেওয়ার নিয়ম

দাবার চাল দেওয়ার নিয়ম শেখা মানেই খেলাটি প্রাথমিক ভাবে শিখে ফেলা। তাই দাবা খেলতে হলে দাবার গুটি চালার নিয়ম খুব ভাল ভাবে মনে রাখতে হবে। উল্লেখ্য যে, দাবা খেলায় প্রথম চাল সবসময় সাদা দল দিয়ে থাকে। তাই কে সাদা দল নেবে তা নিয়ে টসও হতে পারে। তবে দাবার চাল দেওয়ার সকল নিয়ম মূলত দুইটি ভাগে বিভক্ত। একটি হলো সাধারণ নিয়ম আরেকটি বিশেষ নিয়ম।

সাধারণ নিয়ম

দাবার চাল দেওয়ার সাধারণ নিয়ম একেকটি গুটির জন্য একেক রকম। 

সৈন্যের চাল

সৈন্য দাবা খেলার সবচেয়ে কম মূল্যের গুটি। তবে কম মূল্যের বলে একে মোটেও অবহেলা করা উচিত নয়। সৈন্য চালার নিয়মগুলো হলোঃ

  • সৈন্য সাধারণ অবস্থায় শুধু সামনের দিকে চলতে পারবে। 
  • কোনো সৈন্য তার প্রথম চালের সময় একবারে দুই ঘর এগোতে পারবে।
  • যেকোনো দুইটি সৈন্য তাদের প্রথম চালের সময় একই সাথে এক ঘর করে এগোতে পারবে।
  • প্রথম চালের সময় সৈন্যের দুই ঘর যাওয়ার বাধ্যবোধকতা নেই। খেলোয়াড় চাইলে এক ঘরও চালতে পারেন।
  • সৈন্য সামনা-সামনি থাকা কোনো বিপক্ষ গুটি কাটতে পারবে না।
  • বিপক্ষ দলের গুটি কোণাকুনি থাকলে তবেই তা সৈন্য কাটতে পারবে।
  • বিপক্ষ দলের গুটি কাটলে সৈন্যকে কোণাকুনি এক ঘর চলে কলাম পরিবর্তন করতে হবে। অর্থাৎ যেই গুটি কাটা পড়বে সেই গুটির স্থানেই সৈন্য অবস্থান নেবে।  
  • সৈন্য কোনো অবস্থাতেই পেছনে আসতে পারবে না। 
  • সৈন্য কোনো অবস্থাতেই কোনো গুটি ডিঙ্গিয়ে চলতে পারবে না।
সৈন্যের চাল
চিত্রঃ সৈন্যের গতিপথ

নৌকার চাল 

নৌকা, হাতি ও ঘোড়া এই তিনটি দাবায় মধ্যম শক্তিশালী গুটি। তবে এই তিনটির মধ্যেও নৌকার মূল্য বেশি। নৌকা চালার নিয়মঃ

  • নৌকা ডানে-বায়ে ও উপরে-নিচে যেতে পারবে। 
  • নৌকার চলাচলের ক্ষেত্রে দূরত্বের কোনো সীমাবদ্ধতা নেই। অর্থাৎ পথ ফাঁকা থাকলে নৌকা যত ঘর ইচ্ছা যেতে পারে।
  • নৌকার চলার পথে বিপক্ষ কোনো গুটি পড়লেই নৌকা তা কাটতে পারবে। 
  • নৌকা কোনো ভাবেই কোনো গুটি ডিঙ্গিয়ে চলতে পারবে না। 
নৌকার চাল
চিত্রঃ নৌকার গতিপথ

ঘোড়ার চাল

দাবা খেলার সকল গুটির মধ্যে ঘোড়ার একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য রয়েছে। সেটি হলো একমাত্র ঘোড়াই প্রয়োজনে যেকোন গুটি ডিঙ্গিয়ে চলাচল করতে পারে। এই বৈশিষ্ট্যের কারণে অনেক খেলোয়াড়ের কাছেই ঘোড়া সবচেয়ে প্রিয় গুটি। ঘোড়া চালার নিয়মগুলোঃ

  • ঘোড়া প্রতি চালে আড়াই ঘর চলতে পারে। অর্থাৎ ডানে-বামে কিংবা উপরে-নিচে দুই ঘর এগিয়ে ঐ ঘরের ডানে বা বামে এক ঘর যেতে পারে। 
  • ঘোড়া কোনো ভাবেই আড়াই ঘরের কম অথবা বেশি চলতে পারে না। 
ঘোড়ার চাল
চিত্রঃ ঘোড়ার গতিপথ

হাতির চাল

মধ্যম শক্তির এই গুটিটি মন্ত্রীর খুব ভাল সহচর হতে পারে। হাতি চালার নিয়ম হলোঃ

  • হাতির গতিপথ কোণাকুনি।
  • হাতি কোনোভাবেই পাশে চলতে পারবে না।
  • পথ ফাঁকা থাকলে হাতি যত ঘর ইচ্ছা চলতে পারবে। 
  • হাতির চলার পথে বিপক্ষ গুটি পড়লেই হাতি তা কাটতে পারবে।
  • যেই হাতি খেলার শুরুতে কালো ঘরে ছিল তা কোনো ভাবেই সাদা ঘরে আসতে পারবে না। 
  • যেই হাতি খেলার শুরুতে সাদা ঘরে ছিল তা কোনো ভাবেই কালো ঘরে আসতে পারবে না। 
  • হাতি কোনো ভাবেই অন্য গুটি ডিঙ্গিয়ে চলতে পারবে না। 
হাতির চাল
চিত্রঃ হাতির গতিপথ

মন্ত্রীর চাল

মন্ত্রী নিসন্দেহে দাবার সবচেয়ে শক্তিশালী গুটি। দক্ষতার সাথে ব্যবহার করলে শুধু মন্ত্রীই খেলার মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে। রাজা বাদে অন্য সকল গুটি থেকেই এর মূল্য বেশি। মন্ত্রী চালার নিয়মগুলো হলোঃ

  • মন্ত্রী ডানে-বামে, উপরে-নিচে কিংবা কোণাকুনি সকল দিকে চলতে পারবে। 
  • পথ ফাঁকা থাকলে মন্ত্রী যত ঘর ইচ্ছা যেতে পারবে। 
  • মন্ত্রী তার গতিপথে থাকা যেকোনো বিপক্ষ গুটি কাটতে পারবে। 
  • মন্ত্রীর একমাত্র সীমাবদ্ধতা হলো এটি কোনো গুটি ডিঙ্গিয়ে যেতে পারবে না। 
মন্ত্রীর চাল
চিত্রঃ মন্ত্রীর গতিপথ

রাজার চাল

দাবার সবচেয়ে মূল্যবান গুটি হলো রাজা। তবে বিপক্ষ দলের বিরুদ্ধে এর কার্যকারিতা নেই বললেই চলে। তাই বিপক্ষ দল থেকে রাজাকে রক্ষা করার জন্য সার্বক্ষণিক অন্তত দুইটি গুটি প্রয়োজন। রাজা চালার নিয়মগুলোঃ

  • রাজা প্রয়োজনে যেকোনো দিকে যেতে পারবে।
  • রাজা একটি চালে মাত্র এক ঘর যেতে পারবে।
  • নিজের অস্তিত্ব ধংস্ব হবে এমন কোনো ঘরে রাজা কখনোই যেতে পারে না। 
  • রাজা কোনো গুটি ডিঙ্গাতে পারে না। 
  • রাজার চালের সীমানার মধ্যে থাকলে রাজা যেকোনো বিপক্ষ গুটি খেতে পারে। 

রাজা সম্পর্কে একটি ভুল ধারনা অনেক স্থানেই প্রচলিত আছে। সেটি হলো রাজা নিজে বাঁচতে স্বপক্ষের গুটি কাটতে পারে। কিন্তু বাস্তবে এর কোনো বৈধ ভিত্তি নেই।

রাজার চাল
চিত্রঃ রাজার গতিপথ

বিশেষ চাল 

উপরে প্রতিটি গুটিরই সাধারণ চালগুলো সম্পর্কে জেনেছেন। কিন্তু দাবা খেলার নিয়ম এতেই শেষ নয়। রয়েছে আরো অনেক বিশেষ চাল যেগুলো উচ্চ মানের খেলোয়াড়রা ব্যবহার করে থাকেন। সেরকমই কিছু নিয়ম নিচে বর্ণনা করা হলো।

এন প্যাসেন্ট 

বাংলাদেশের সাধারণ খেলোয়াড়দের মধ্যে এন প্যাসেন্ট (En paassant) খুব একটা পরিচিত চাল নয়। কারণ এই চালটির সুযোগ তৈরি হওয়া বেশ দুর্লভ। এটি মূলত দু’টি ফ্রেঞ্চ শব্দ যার ইংরেজি হলো ইন পাসিং (In passing)।

আমরা জানি, সৈন্যরা তাদের প্রথম চালে দুই ঘর আগাতে পারে। কিন্তু যদি বিপক্ষ দলের সৈন্য আপনার সৈন্য সারির থেকে ঠিক এক ঘর দূরে থাকে এবং আপনি তার পাশের কোনো সৈন্য দুই ঘর চালেন, তাহলে এন প্যাসেন্ট সম্ভব। অর্থাৎ যদিও আপনি দুই ঘর চেলে আপনার সৈন্যকে বিপক্ষ সৈন্যের পাশাপাশি নিয়ে যাবেন কিন্তু বিপক্ষ সৈন্য চাইলে আপনার সৈন্যকে কাটতে পারবে। এবং আপনার সৈন্য মাত্র এক ঘর চাললে যে অবস্থানে থাকতো বিপক্ষ সৈন্য সে অবস্থান দখল করবে। 

এন প্যাসেন্ট
চিত্রঃ কালো সৈন্য প্রথমে চালে দুই ঘর এগিয়ে আসছে।
এন প্যাসেন্ট ২
চিত্রঃ কালো সৈন্যকে কেটে সাদা সৈন্য কলাম পরিবর্তন করছে।

ক্যাসলিং 

ক্যাসলিং (Castling) হলো এমন একটি দাবার চাল যার মাধ্যমে আপনি রাজাকে চূড়ান্ত নিরাপত্তা বলয়ে আবদ্ধ করবেন। এর মাধ্যমে আপনার রাজা বোর্ডের মাঝ থেকে বোর্ডের এক কোণে চলে যাবে। আপনি চাইলে তার আশে পাশে গুটি মোতায়েন করে তাকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিতে পারেন। ক্যাসলিং করার নিয়মগুলো হলোঃ

  • ক্যাসলিং শুধু রাজা ও যেকোনো এক নৌকার মধ্যে হবে।
  • ক্যাসলিং করার আগে যদি রাজা বা নৌকা দিয়ে কোনো চাল দেওয়া হয় তাহলে আর ক্যাসলিং করা যাবে না।
  • ক্যাসলিং করতে চাইলে রাজা ও নৌকার মধ্যে অন্য কোনো গুটি থাকা যাবে না। 
  • ক্যাসলিং করে রাজা এমন কোনো ঘরে যেতে পারবে না যেখানে সে চেকের মুখে পড়ে।
  • রাজা চেকের মুখে পড়লে চেক কাটাতে ক্যাসলিং করতে পারবে না। 
  • ক্যাসলিং করার সময় রাজা যেকোনো দিকে দুই ঘর যেতে পারবে। 
  • দুই ঘর যাওয়ার পরে ঐ একই চালে নৌকা রাজাকে রক্ষা করতে রাজার পাশে এসে দাঁড়াবে।
  • রাজা বামে এগোলো বামের নৌকা রাজার ডান দিকে বসবে। রাজা ডানে এগোলে ডানের নৌকা রাজার বাম দিকে বসবে।
ক্যাসলিং
চিত্রঃ সাদা রাজার ডান দিকে ক্যাসলিং।
ক্যাসলিং ২
চিত্রঃ সাদা রাজার বাম দিকে ক্যাসলিং।

ক্যাসলিং চালটি বেশ চটকদার এবং আকর্ষণীয় বলে অনেক খেলোয়াড়ই এটি করতে পছন্দ করেন। কিন্তু মনে রাখতে হবে এটি একটি উচ্চ পর্যায়ের চাল। এই চালের ফলে রাজার নিরাপত্তা যেমন বাড়ে, ঠিক তেমনি ঝুঁকিও বাড়ে। কারণ ক্যাসলিং করার ফলে রাজা অনেকটাই বদ্ধ স্থানে চলে যায়। তাই কোনোভাবে চেকের মুখ পড়লে রাজার পক্ষে তা কাটানো প্রায় অসম্ভব হয়ে যায়। এজন্যই ক্যাসলিং করার আগে ভাল ভাবে চিন্তা করেই করা উচিত।

সৈন্যের উন্নতি

আমরা জানি যে সৈন্য দাবা খেলার সবচেয়ে সাধারণ ও কম মূল্যের গুটি। কিন্তু একটি বিশেষ উপায়ে সৈন্য হয়ে উঠতে পারে খেলার সবচেয়ে মূল্যবান গুটি। পদ্ধতিটি কঠিন হলেও জটিল নয়। যদি খেলার কোনো অংশে আপনি আপনার সৈন্যকে বিপক্ষের শেষ ঘরে পৌছে দিতে পারেন তাহলেই কেল্লা ফতে! সেই সৈন্যটি রাজা বাদে অন্য যেকোনো গুটির সমান ক্ষমতাবান হয়ে যাবে। তা হতে পারে হাতি, ঘোড়া, নৌকা এমনকি মন্ত্রী। এর মাধ্যমে খুব সহজেই খেলার উপর হারানো নিয়ন্ত্রণ আবারো প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব।

দাবা খেলায় জেতার উপায়

দাবা খেলায় নানা ভাবে জেতা সম্ভব। নিচে দাবা খেলায় জেতার উপায়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো। 

চেকমেট

দাবা খেলায় জেতার সবচেয়ে বহুল প্রচলিত উপায় হলো চেকমেট। বাংলায় যাকে বলে কিস্তিমাত। আগেই বলেছি, দাবা খেলায় রাজাই একমাত্র গুটি যেটি কখনো কাটা যায় না। দাবা খেলায় জিততে হলে রাজাকে না কেটে আটকে ফেলতে হয়। আর সেটিকেই বলে চেকমেট।

চেকমেটের প্রথম ধাপ হলো চেক। দাবা খেলায় চেক অর্থ আক্রমণ করা। বিপক্ষ দলের কোনো গুটি যদি এমন অবস্থায় আসে যে পরবর্তী চালেই সে আপনার রাজাকে সরাসরি আক্রমণ করতে পারবে, সেই অবস্থাই হলো চেক। এমতাবস্থায় অবশ্যই আপনাকে চেকটি সামাল দিতে হবে। যা সাধারণত তিন উপায়ে করা যায়।

  • চেক সৃষ্টিকারী গুটিটিকে ধংস্ব করা। অর্থাৎ বিপরীত দলের যেই গুটি আপনার রাজাকে চেক দেবে আপনি নিজের গুটি দিয়ে সেটিকে কাটতে পারেন।
  • রাজাকে নিরাপদ ঘরে সরিয়ে নেওয়া যেখানে চেক নেই।
  • রাজা বাদে আপনার যেকোনো গুটিকে চেকের পথে দাড় করিয়ে দেওয়া।

কিন্তু যদি আপনার রাজাকে বাঁচানোর কোনোই পথ না থাকে তাহলে সেটি হয়ে যাবে চেকমেট বা কিস্তিমাত। আর চেকমেটের মাধ্যমেই সাধারণত একজন খেলোয়াড় দাবা খেলায় জিতে থাকেন। 

চেকমেট
চিত্রঃ চেক
চেকমেট
চিত্রঃ চেকমেট

আত্নসমর্পণ 

যেকোনো খেলার মতই দাবা খেলাতেও আত্নসমর্পণ করার সুযোগ রয়েছে। কোনো খেলোয়াড় যদি বুঝতে পারে যে তার বিপক্ষের বিরুদ্ধে জেতার কোনো সুযোগই নেই তাহলে সে আত্নসমর্পণ করতে পারে। এর মাধ্যমে বিপক্ষ দলে জিতে যায়। 

টাইম আউট

টাইম আউটের ব্যাপারটি সাধারণত টুর্নামেন্ট খেলাতেই দেখা যায়। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টগুলোতে প্রত্যেক খেলোয়াড়ের জন্য নির্দিষ্ট টাইম দেওয়া থাকে। সে প্রতিটি চাল দিতে কত সময় নিচ্ছে তা স্টপ ওয়াচের মাধ্যমে হিসাব রাখা হয়। আর খেলা শেষ হওয়ার আগেই কোনো খেলোয়াড়ারের সময় শেষ হয়ে গেল সে হেরে যায়।

দাবা খেলায় ড্র

দাবা খেলায় সাধারণত ৪ ভাবে ড্র হয়ে থাকে। 

স্টেইলমেট 

স্টেইলমেট (Stalemate) হলো দাবার এমন একটি অবস্থা যেখানে রাজার কোনো বৈধ চাল থাকে না। স্টেইলমেটকে অনেকেই চেকমেটের সাথে গুলিয়ে ফেলেন। কিন্তু চেকমেটের সাথে স্টেইলমেটের একটি বড় পার্থক্য রয়েছে। চেকমেটে বিপক্ষ রাজা সরাসরি আক্রমণের মুখে থাকবেন কিন্তু স্টেইলমেটে বিপক্ষ রাজা সরাসরি আক্রমণের মুখে থাকে না। বরং স্টেইলমেটে তার যাওয়ার জন্য কোনো ঘর অবশিষ্ট থাকে না। এমন অবস্থায় খেলাটি ড্র হিসেবে গণ্য হয়। কারণ যদিও বিপক্ষ রাজার যাওয়ার কোনো যায়গা নেই, কিন্তু যেখানে সেটি আছে সেখানে সেটি বিপন্ন নয়। এজন্য স্টেইলমেটে কেউ বিজয় দাবি করতে পারে না।

স্টেইলমেট
চিত্রঃ স্টেইলমেট (রাজা চেকে না পড়লেও যাওয়ার কোনো যায়গা নেই)।

সাধারণত সম্ভাব্য বিজয়ীর অসাবধানতার বশে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়। যেই খেলোয়াড় হেরে যাচ্ছেন তিনি চেষ্টা করবেনই খেলাটিতে না হেরে ড্র করতে। এক্ষেত্রে যেই খেলোয়াড় জিতে যাচ্ছেন তার সাবধানে থাকতে হবে যাতে কোনোভাবেই স্টেইলমেট অবস্থার সৃষ্টি না হয়। 

থ্রিফোল্ড রিপিটিশন (Threefold Repitition) 

খেলোয়াড়দের দাবা খেলায় বার বার একই চাল দেওয়া থেকে বিরত রাখার জন্য এই নিয়মটির সৃষ্টি হয়েছে। অনেক সময় দেখা যায় আটকা পড়া রাজা বার বার দুটি ঘরের মধ্যে যাওয়া আসা করছে। কিন্তু থ্রিফোল্ড রিপিটিশনের নিয়ম অনুযায়ী কোনো খেলোয়াড়ের বিপন্ন রাজা একই ঘরে পর পর তিনবার চালতে পারবে না। যদি এমন অবস্থার সৃষ্টি হয় তাহলে খেলাটি ড্র হিসেবে গণ্য হবে। এক্ষেত্রেও আক্রমণকারী খেলোয়াড়কে সাবধান থাকতে হবে যাতে হারতে থাকা খেলোয়াড় ইচ্ছাকৃতভাবে এটি না ঘটাতে পারে। 

ফিফটি মুভ রুল (Fifty Move Rule)

এই নিয়মটিও খেলোয়াড়দের বার বার একই চাল দেওয়া থেকে বিরত রাখার জন্য সৃষ্টি হয়েছে। এই নিয়ম অনুযায়ী  যেকোনো টানা ৫০ চালের ভেতর যদি কোনো গুটি কাটা না যায় অথবা কোনো সৈন্য না নড়ে তাহলে ঐ খেলাটি ড্র হিসেবে গণ্য হবে। অনেক স্থানে ৫০ চালের বদলে ৭৫ চাল ধরেও এই নিয়ম অনুসরণ করা হয়। 

গুটির অভাব

গুটির অভাব দাবা খেলা ড্র হওয়ার অন্যতম কারণ। যখন বোর্ডে শুধু দুইজন রাজা বেঁচে থাকে তখন খেলাটি ড্র হয়। কারণ শুধু দুইজন রাজার পক্ষে বৈধ ভাবে খেলা শেষ করা সম্ভব নয়। এছাড়াও টুর্নামেন্ট ব্যাতীত অন্যান্য খেলায় দুইজন খেলোয়াড়ের সম্মতি ক্রমে ড্র ঘোষণা করা যেতে পারে। 

কিভাবে দাবা খেলায় ভাল করবেন?

আগেই বলেছি, দাবা একটি বুদ্ধির খেলা ও যুক্তির খেলা। দাবা খেলায় পারদর্শী হয়ে ওঠাটা খুব সহজ নয়। এর জন্য প্রয়োজন দীর্ঘ অধ্যাবসায়। তবে সেই প্রক্রিয়াকে দ্রুত করে তোলার জন্য কিছু পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারেন। 

নিয়মগুলো ভাল ভাবে জানুন

খুব উঁচু দরের খেলোয়াড় না হলে সকলেরই উচিত দাবার নিয়মগুলো নিয়মিত পড়া। নিয়ম জানা থাকলেও এটি করা উচিত। কারণ যেকোনো কৌশল খাটাতে গেলে এসব নিয়ম আপনাকে সিধান্ত নিতে ও কৌশল তৈরি করতে সাহায্য করবে।

অহেতুক চাল নষ্ট করবেন না

অনেক খেলোয়াড়ই কি করবেন ভেবে না পেয়ে অহেতুক চাল দেন। এটি করা একদমই উচিত নয়। খেলায় জিততে হলে প্রথম থেকেই ভেবে চাল দিতে হবে। কোনো চালই নষ্ট করা যাবে না। 

সৈন্যকে গুরুত্ব দিন

সৈন্যের মূল্য কম বলে অনেকেই যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে সৈন্য চালেন। এটি একদমই উচিত নয়। প্রথমত সৈন্য বোর্ডের মধ্যবর্তী অঞ্চল দখল করতে পারে। যা আপনার শত্রুর অবাধ চলাচলে বাধা সৃষ্টি করে। দ্বিতীয়ত সৈন্য একমাত্র গুটি যা পেছনে চালা যায় না। ফলে সৈন্য একবার ভুল চেলে ফেললে তা ঠিক করার কোনো সুযোগ নেই। 

বোর্ডের মধ্যবর্তী অঞ্চল দখল করুণ

বোর্ডের মধ্যবর্তী অঞ্চল দখলে রাখা দাবা খেলার একটি প্রধান বিষয়। অনেক খেলোয়াড় নিজের সাজানো গুটি একই রকম রাখতে পছন্দ করেন। এটি না করে নিজের সব গুটিকে বোর্ডের মধ্যে অবস্থান করাতে পারলে দারুণ ফলাফল পাওয়া যায়। এই প্রক্রিয়ায় আপনার বিপক্ষ দল চাপে থাকবে। আবার আপনি আক্রমণ ও প্রতিরোধ দুটিই সহজে করতে পারবেন। 

নিজের ভুল থেকে শেখার চেষ্টা করুন

নিজের ভুল থেকে শেখা দাবার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই প্রতিটি ম্যাচ হারার পরে কেন হেরেছেন এবং কি কি ভুল করেছেন তা ভেবে দেখুন। যদি তার সুযোগ না থাকে তাহলে খেলাগুলোর রেকর্ড রাখার চেষ্টা করুন। 

পরবর্তী চালগুলো মাথায় সাজিয়ে রাখুন

আপনি একটি চাল দেওয়ার পরে পরবর্তী চালগুলো ঠিক কি কি হতে পারে তা সাজিয়ে রাখুন। এক্ষেত্রে আপনার বিপক্ষ পরবর্তী কয়েক চালে কি রকম আচরণ করতে পারে তাও আন্দাজ করার চেষ্টা করুন। দাবা খেলা অনেকটাই সম্ভাবনার অংকের মতো। প্রতিটি চালের পরে তার সম্ভাব্য কি কি ফলাফল হতে পারে তা বোঝার চেষ্টা করুন। 

পড়াশোনা করুন

ঠিকই শুনেছেন। দাবায় ভাল করতে হলে আসলেই পড়াশোনা করতে হবে। বিভিন্ন ওপেনিং সম্পর্কে জানতে হবে। আরো গুরুত্ব দিয়ে বিভিন্ন এন্ড গেম সম্পর্কে জানতে হবে। ফলে খেলার শুরু ও শেষে আপনার মোটামুটি পরিষ্কার ধারনা থাকবে যে আপনি কি করতে চলেছেন। এছাড়াও বিভিন্ন বিখ্যাত গ্র্যান্ড মাস্টারদের খেলা দেখার মাধ্যমেও অনেক কিছুই শেখা সম্ভব।

গুটির শক্তি ও দুর্বলতা বোঝার চেস্থা করুন

সকল গুটি সব সময় এবং সকল স্থানে শক্তিশালী থাকে না। যেমন খেলার মধ্যম পর্যায় বোর্ডের মাঝে সৈন্যরা বেশ শক্তিশালী। কিন্তু খেলার শেষ পর্যায়ে একক সৈন্য একেবারেই দুর্বল। এছাড়াও ঘোড়া বোর্ডের মাঝে বেশি ভূমিকা রাখতে পারে। অন্যদিকে হাতি বোর্ডের কোণে দারুণ বিধ্বংসী। একই ভাবে ঘোড়া অধিক সংখ্যক গুটির মধ্যে ভাল খেলতে পারে। কিন্তু হাতি ফাঁকা বোর্ডে ভাল ফলাফল দেয়। এভাবে প্রতিটি গুটির শক্তিমত্তা এবং দুর্বলতা রয়েছে। খেলার সময় অবশ্যই এই বিষয়গুলির প্রতি নজর দিতে হবে।

প্রচুর অনুশীলন করুন

কোনো কিছুতে ভাল হতে চাইলে অনুশালীনের কোনোই বিকল্প নেই। তাই দাবা খেলায় ভাল হতে চাইলে প্রচুর অনুশীলন করুন। সম্ভব হলে আসল প্রতিপক্ষের সাথে খেলুন। সম্ভব না হলে কম্পিউটার বা মোবাইলে দাবার গেম নামিয়ে খেলুন। 

শেষকথা

সর্বোপরি দাবা একটি দারুণ খেলা। কে দাবায় কতটা ভাল তা দিয়ে অনেক সময়ই কে কতটা বুদ্ধিমান তা নির্ধারণ করা যায়। 

অনবরত জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী 

১) দাবার সেটের দাম কত?

উত্তরঃ সাধারণ লাইব্রেরীতে ৬০ বা ১০০ টাকাতেও দাবার সেট পাবেন। তবে মোটামুটি ভাল দাবার সেট কিনতে চাইলে ৪০০-৫০০ টাকার প্রয়োজন পড়বে। সৌখিন দাবার সেটের দাম ৪-৫ হাজার থেকে শুরু করে ২০-২৫ হাজার টাকাও হতে পারে।

২) সর্বনিম্ন কত চালে চেকমেট দেওয়া যায়?

উত্তরঃ সর্বনিম্ন দুটি চালে চেকমেট দেওয়া যায়। একে অনেকে ফুল’স মেট ও বলে। 

৩) দাবার প্রথম বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন কে?

উত্তরঃ দাবার প্রথম বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন উইলহেলম স্টেইনিটজ।

৪) দাবা খেলোয়াড়দের জন্য সর্বোচ্চ খেতাব কি?

উত্তরঃ বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন বাদে দাবা খেলোয়াড়দের জন্য সর্বোচ্চ খেতাব হলো গ্র্যান্ড মাস্টার বা জিএম। 

৫) বাংলাদেশে কি দাবার কোনো গ্র্যান্ড মাস্টার আছে?

উত্তরঃ হ্যাঁ আছে। উনার নাম নিয়াজ মোরশেদ।

 

Previous Post Next Post