এসইও কি
এসইও (SEO) এর অর্থ হলো Search Engine Optimization – সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন। সহজ ভাষায় বলতে গেলে, এসইও বা Search Engine Optimization হলো কোনো ওয়েবসাইটকে বা ওয়েবসাইটের কোনো পেইজকে সার্চ ইঞ্জিনে (Search Engine) র্যাঙ্ক করানোর কলা-কৌশল।
এটি একধনের মার্কেটিং কৌশল, হতে পারে সেটা কোনো সার্ভিস বা প্রোডাক্টের মার্কেটিং অথবা কন্টেন্ট মার্কেটিং ইত্যাদি। এরপরেও যদি আপনার বুঝতে সমস্যা হয় যে, সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন কি? তাহলে চলুন একটি উদাহরণের মাধ্যমে এসইও কাকে বলে সেটা জেনে নেওয়া যাক।
আগে বা কিছু কিছু ক্ষেত্রে বর্তমানেও প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের মার্কেটিং অফলাইনে অর্থাৎ লিফলেট, বিলবোর্ড, ফেস্টুন ইত্যাদি ব্যবহার করে করা হয়। কিন্তু ধীরে আমাদের চারিপাশের সবকিছু ডিজিটাল হচ্ছে, তেমনি অনেক কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান তাদের ব্যবসায় অনলাইনে নিয়ে আসছে, এখানেই চলে আসে ডিজিটাল মার্কেটিং এর ব্যাপার।
ডিজিটাল মার্কেটিং হলো অনলাইনে বা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে কোনোকিছুর মার্কেটিং করা। আর এসইও হলো ডিজিটাল মাকের্টিং এর একটা অংশ মাত্র।
ধরুন, আপনি একটি স্মার্টফোন কিনতে চান। গুগলে গিয়ে সার্চ করলেন “২০০০০ টাকার মধ্যে ভালো গেমিং ফোন” তাহলে দেখবেন গুগল আপনাকে অসংখ্য ওয়েবসাইটের সন্ধান দিয়ে দিয়েছে। কিন্তু এখানে ওয়েবসাইট গুলো একটার পরে আরেকটা সিরিয়ালি অবস্থিত।
কয়েক হাজার ওয়েবসাইটের সন্ধান পাবেন, কিন্তু সবগুলো ওয়েবসাইট কি সার্চ রেজাল্টের প্রথম প্রথম পেইজে দেখতে পাচ্ছেন? অবশ্যই না।
এখানে প্রথমে যে ওয়েবসাইটটা দেখতে পাচ্ছেন সেই ওয়েবসাইটটা আপনার সার্চ করা কিওয়ার্ডের জন্য ভালোভাবে এসইও অপ্টিমাইজ করানো। নির্দিষ্ট এক বা একাধিক কিওয়ার্ডের জন্য কোনো একটা ওয়েবসাইট বা ওয়েবপেইজকে সার্চ রেজাল্টে সবার উপরে বা প্রথমে দেখানোর সে প্রতিযোগিতা সেটাই হলো মূলত এসইও (SEO)।
এসইও এর গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা
এসইও এর সঙ্গার মধ্যেই এর গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা লুকিয়ে আছে। যেকোনো ধরনের ওয়েবসাইটকে মানুষের কাছে পরিচিত করানো, সাইটে ট্রাফিক বৃদ্ধি করা ও লক্ষ্যে পৌছানোর জন্য এসইও বা সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন এর গুরুত্ব অপরিসীম।
আপনার যদি একটা ব্লগ সাইট বা ই-কমার্স সাইট অথবা অন্য যেকোনো ওয়েবসাইটই থাকে তাহলে আপনি অবশ্যই চাইবেন যে প্রতিনিয়ত আপনার ওয়েবসাইটে অনেক বেশি ট্রাফিক আসুক, কেউ কোনো নির্দিষ্ট কিওয়ার্ড দিয়ে সার্চ করলে যেন আপনার ওয়েবসাইটটা সবার আগে সার্চ রেজাল্টে দেখতে পায়।
আর এই কাজটা করার জন্য ওয়েবসাইটের এসইও এর কোনো বিকল্প নেই। সারা পৃথিবীজুড়ে এসইও-এক্সপার্টদের চাহিদা দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে। কারণ অনলাইনে অনেক বড় বড় কোম্পানি, স্টার্টআপ গড়ে উঠতে শুরু করেছে।
এছাড়াও অনেক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ব্লগিংকে বাড়তি অর্থ উপার্জনের উপায় ও মূল পেশা হিসেবে বেছে নিতে শুরু করেছে।
আর তাদের ওয়েবসাইটকে গুগল সহ অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনে র্যাঙ্ক করানোর জন্য প্রয়োজন এসইও এক্সপার্ট। তাই কেউ যদি পেশাগত ভাবে এসইও এর কাজ করেন তাহলে সেটা একটা সম্ভাবনাময় পেশা হবে।
এসইও কি seo কি? কীভাবে এসইও করতে হয় এটা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে আপনাকে অবশ্যই সার্চ ইঞ্জিন কী? সার্চ ইঞ্জিন কীভাবে কাজ করে এটা সম্পর্কেও আপনাকে জানতে হবে ।
সার্চ ইঞ্জিন কি
অনেকেই প্রশ্ন করেন সার্চ ইঞ্জিন কি সার্চ ইঞ্জিন হলো এমন একটি সফটওয়্যার বা প্রোগ্রাম যেটা আপনার দেওয়া নির্দিষ্ট কোনো কিওয়ার্ডের ভিত্তিতে গোটা ইন্টারনেট জগৎ থেকে তথ্য খুঁজে আপনার সামনে হাজীর করে। এটাকে একটা বিশাল তথ্য-লাইব্রেরির কর্মচারীর সাথে তুলনা করা যেতে পারে।
আপনি যখন কোনো লাইব্রেরিতে গিয়ে নির্দিষ্ট কোনো বই খুঁজেন তখন সেই লাইব্রেরিতে থাকা কর্মচারী বা কর্মকর্তা জানেন যে বইটা লাইব্রেরিতে আছে কিনা আর থাকলেও সেটা কোথায় আছে। বইটা লাইব্রেরিতে থাকলে সে সেটা খুঁজে এনে আপনার সামনে হাজীর করে। কোনো একটা সার্চ ইঞ্জিনও ঠিক এই কাজটি করে থাকে।
যখন নতুন কোনো একটা ওয়েবসাইট বা ওয়েবপেইজ খোলা হয় তখন সেটা ইন্টারনেটে সংযুক্ত থাকে ঠিকই কিন্তু যতক্ষণ পর্যন্ত না সেটা কোনো সার্চ ইঞ্জিনের ডেটাবেজে তালিকাভুক্ত করা হবে ততক্ষণ পর্যন্ত কোনো সার্চ ইঞ্জিনে সেই ওয়েবসাইটের নাম বা সম্পর্কিত কোনো কিওয়ার্ড লিখলে খুঁজে পাওয়া যাবে না।
আপনি যদি চান যে, কেউ আপনার ওয়েবসাইটের নাম বা কোনো কিওয়ার্ড লিখে সেখানে সার্চ করে খুঁজে পাক থাকে আপনাকে অবশ্যই সেই সার্চ ইঞ্জিনের কাছে আপনার ওয়েবসাইটকে সাবমিট করতে হবে। আর সার্চ ইঞ্জিন যখন ওয়েবসাইটের যাবতীয় পাবলিক ডেটা ডেটাবেজে তালিকাভুলক্ত করবে তখন এই প্রক্রিয়াটিকে বলা হয় ক্রলিং (Crawling)
সার্চ ইঞ্জিন কিভাবে কাজ করে?
উপরের আলোচনা থেকে আশা করি এই প্রশ্নের উত্তরের কিছুটা আঁচ পেয়েছেন। সার্চ-ইঞ্জিনের কাজ করার প্রক্রিয়াটা সম্পর্কে আরেকটু বিস্তারিত জেনে নেয়। সার্চ-ইঞ্জিনগুলো মূলত ওয়েবসাইট থেকে বিভিন্ন প্রকার তথ্য সংগ্রহ করে থাকে।
যখন কোনো একটা ওয়েবসাইটকে সার্চ-ইঞ্জিনের কাছে ক্রলিং এর জন্য রিকোয়েস্ট পাঠানো হয় তখন সার্চ-ইঞ্জিন বটগুলো ঐ ওয়েবসাইট থেকে প্রয়োজনীয় সকল ডেটা সংগ্রহ করতে থাকে, যত বেশি সম্ভব ডেটা সংগ্রহ করা যায় তারা সেটাই করে।
এরপর ঐ ওয়েবসাইটে যখন নতুন কোনো তথ্য যুক্ত করা হয় তখনও বটগুলো ওই ওয়েবসাইটে যায় এবং নতুন ডেটা সংগ্রহ করে। এছাড়াও পুরনো কোনো ডেটা নতুনভাবে আপডেট করা হলে সেটাও কালেক্ট করে।
এভাবে প্রতিনিয়ত সার্চ-ইঞ্জিন বট বা রোবটগুলো লক্ষ লক্ষ্য ওয়েবসাইটে ঢুঁ মেরে নানা ধরনের তথ্য সংগ্রহ করে নিজেদের তথ্য ভান্ডারে জমা করতে থাকে। আর যখন কেউ কোনো বিষয়ে তথ্য খোঁজে বা সার্চ করে তখন সেই তথ্যভান্ডার বা ডেটাবেজ থেকে তথ্য দেখায়।
এসইও কত প্রকার ও কি কি?
বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে এসইওকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা যায়। অনেকে বলেন, এসইও হলো দুই প্রকার। যথাঃ অন-পেজ এসইও এবং অফ-পেজ এসইও। আবার কেউ কেউ বলেন এসইও দুই প্রকার আর তা হলো অর্গানিক এসইও এবং পেইড এসইও।
কিন্তু যদি আমাকে জিজ্ঞেস করেন যে, এসইও কত প্রকার ও কি কি? আমি তার উত্তরে বলবো, এসইও হলো প্রধানত ৩ প্রকার। নিচের অংশে আমরা এসইও এর সঠিক প্রকারভেদ নিয়ে আলোচনা করবো।
এসইও বা সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন প্রধানত তিন প্রকার
১. হোয়াইট হ্যাট এসইও (White Hat SEO)
২. ব্ল্যাক হ্যাট এসইও (Black Hat SEO)
৩. গ্রে হ্যাট এসইও (Grey Hat SEO)
হোয়াইট হ্যাট এসইও কি? (What is White Hat SEO?)
হোয়াইট হ্যাট এসইও হলো সার্চ ইঞ্জিনের নির্দেশনা মেনে সঠিক পদ্ধতিতে কোনো ওয়েবসাইট বা ওয়েবপেইজকে গুগলে র্যাঙ্ক করানো। এটাকে মূলত নৈতিক (Ethical) সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন বলা হয়।
হোয়াইট হ্যাট SEO এর কিছু টার্ম রয়েছে, যেগুলোকে নির্দেশনা বলা হচ্ছে। সেগুলো হলো – আর্টিকেল বা কন্টেন্ট উপকারী হতে হবে, যথেষ্ট পরিমাণে কিওয়ার্ড রিসার্চ করতে হবে, ওয়েবসাটের ইনবাউন্ড ব্যাকলিংক থাকতে হবে, কিওয়ার্ড স্টাফিং করা যাবে না ইত্যাদি।
হোয়াইট হ্যাট সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশনকে আবার ৩ প্রকার
যেমনঃ
১. অন পেজ এসইও (on-page SEO)
২. অফ পেজ এসইও (off-page SEO)
৩. টেকনিক্যাল এসইও (Technical SEO)
এবার চলুন এই তিন প্রকার এসইও নিয়ে সংক্ষিপ্তাকারে ধারণা নিয়ে নেয়। পরবর্তী আর্টিকেলে আমরা এই তিন প্রকার এসইও সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো।
অন পেজ এসইও
অন পেজ SEO হলো সাইটের ভেতরে নানারকম কৌশল প্রয়োগ করে ওয়েবসাইটকে র্যাঙ্ক করানোর পদ্ধতি। এটা ইথিকাল অপ্টিমাইজেশনের অন্যতম গুরুত্বপুর্ন অংশ। একটা আর্টিকেলকে সুন্দর করে সাজিয়ে, গুরুত্বপূর্ণ কিওয়ার্ড প্লেস করে, ব্যবহারকারীদের জন্য উপকারী করে, সুন্দর ও গোছানো মেটা ডেস্ক্রিপশন লিখতে হয়।
আকর্শনীয় টাইটেল সহ কিছু অন পেইজ এসইও টেকনিক মাথায় রেখে কোনো পেইজ বা আর্টিকেল গুগলে র্যাঙ্ক করানো হলে থাকে on-page SEO বলা হয়।
অফ পেজ এসইও
অফ পেজ এসইও হলো ওয়েবসাইটের বাইরে গিয়ে সাইটকে সার্চ ইঞ্জিনের জন্য অপ্টিমাইজ করা। এক্ষেত্রে আপনাকে কিছু অফ পেজ এসইও টেকনিক ফলো করতে হবে। সেগুলো হলো ইনবাউন্ড ব্যাকলিংক, সোশ্যাল মিডিয়া শেয়ার ও এংগেজমেন্ট, ফোরাম সাবমিশন, প্রশ্নোত্তর সাইটে সাবমিশন ইতাদি।
এই উপায়গুলো অনুসরণ করে ওয়েবসাইটের জনপ্রিয়তা বাড়াতে পারলে সেটা হবে off-page SEO কৌশল। এ বিষয়ে আমরা পরবর্তী পর্বে বিস্তর আলোচনা করবো, কিভাবে অফ পেজ SEO করতে হয় এবং off-page SEO Technique ইত্যাদি বিষয় অন্তর্ভূক্ত থাকবে সেখানে।
টেকনিক্যাল এসইও
সার্চ ইঞ্জিনের জন্য টেকনিক্যাল বিষয়বস্তু অপ্টিমাইজ করে ওয়েবসাইটকে র্যাঙ্ক করানোর কৌশল হলো টেকনিক্যাল এসইও বা Technical SEO। এটা ওয়েবসাইটের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। টেকনিক্যাল এসইও করার কিছু প্রক্রিয়া আছে সেগুলো হলো
১. ওয়েবসাইটের স্ট্রাকচার ও ডিজাইন
২. এসএসএল (SSL) সার্টিফিকেট
৩. ইউআরএল (URL) স্ট্রাকচার
৪. পেজ লোডিং স্পীড
৫. মোবাইল ফ্রেন্ডলি
৬. ইউজার ফ্রেন্ডলি ডিজাইন ইত্যাদি
ব্ল্যাক হ্যাট এসইও কি? (WHAT IS BLACK HAT SEO?)
সার্চ ইঞ্জিনের নীতমালা ও নির্দেশনা ভঙ্গ করে অনৈতিক উপায়ে কোনো ওয়েবসাইট বা ওয়েবপেজেকে র্যাঙ্ক করানোকে বলে ব্ল্যাক হ্যাট SEO। এটাকে সাধারনত অনৈতিক বা Unethical সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন বলা হয়।
কিছু টার্ম আছে সেগুলো গুগল অনুমোদন দেয় না, এধরনের টার্মগুলো ব্যবহার করে ও কূটকৌশল অবলম্বন করে ওয়েবসাইট র্যাঙ্ক করালে তাকে Black Hat SEO বলে। টার্মগুলো হলো- কিওয়ার্ড স্টাফিং, লিংক ফার্ম, ডোরওয়ে পেজ ইত্যাদি।
কিওয়ার্ড স্টাফিং
কিওয়ার্ড স্টাফিং হলো কোনো একটা আর্টিকেল বা পেইজকে এমন সব সম্ভাব্য কিওয়ার্ড দিয়ে ভর্তি করে রাখা যা মানুষেরা সার্চ করতে পারে। এটা ব্ল্যাক হ্যাট এসইও এর অন্যতম Technique। এই ধরনের আর্টিকেল সাধারনত মানুষের উপকারের জন্য লেখা হয় না, বরং ওয়েবসাইটের র্যাংকিং বাড়ানোর জন্য লেখা হয়।
কেউ কেউ আর্টিকেলে অতিরিক্ত কিওয়ার্ড প্লেস করে সেগুলো ওয়েবপেইজের কালার দিয়ে অদৃশ্য করে দেয় যাতে মানুষকে পড়তে না হয়, কিন্তু আর্চ ইঞ্জিন বটকে এগুলো পড়তে হয়। গুগল বা অন্যকোনো সার্চ ইঞ্জিন যদি বুঝতে পারে যে আপনি কিওয়ার্ড স্টাফিং করেছেন তাহলে ওয়েবসাইটকে কিক-আউট করে দিতে পারে।
লিংক ফার্ম
লিংক ফার্ম হলো এমন একটি কূটকৌশল যেখানে একই ব্যক্তি একাধিক ওয়েবসাইট বানিয়ে প্রতিটি ওয়েবসাইট থেকে প্রতিটি সাইটকে ডু-ফলো ব্যাকলিংক দেয়। ধরুন, আপনার ৩টা ওয়েবসাইট আছে।
এখন আপনি একটা ওয়েবসাইটের পোস্টের লিংক অন্য একটা ওয়েবসাইটের পোস্টে ডু-ফলো ব্যাকলিংক হিসেবে দিলেন, এভাবে প্রতিটা সাইট থেকে ব্যাকলিংক অন্য একটা সাইটে দিতে থাকলেন।
এতে করে সবগুলো সাইটেই ব্যাকলিংকের পরিমাণ বৃদ্ধি পেলো, ধীরে ধীরে সাইট র্যাংক করবে কিন্তু গুগল একবার টের পেলে আপনার সবগুলো সাইটেই পেনাল্টি দিতে পারে। তাই এই ধরনের কূটকৌশল অবলম্বন করা থেকে বিরত থাকবেন।
ডোরওয়ে পেজ
এটা হলো এমন এক ধরনের ওয়েবপেজ যেখানে ব্যবহারকারীদের জন্য উপকারী কোনো তথ্য থাকে না কিন্তু প্রচুর পরিমাণে কিওয়ার্ড প্লেস করা থাকে। এধরনের আর্টিকেল বা পেইজ থেকে সার্চ ইঞ্জিনগুলো অনেক বেশি কিওয়ার্ড খুঁজে পায় যার ফলে র্যাঙ্কিং বাড়িয়ে দেয়।
আবার কিছু সময় এসব পেজে অন্য একটা পেইজের লিংক দেওয়া থাকে যেখানে পরবর্তীতে রিডাইরেক্ট হয়ে যায়।
গ্রে হ্যাট এসইও কি? (WHAT IS GREY HAT SEO?)
আপনি যদি হোয়াইট হ্যাট ও ব্ল্যাক হ্যাট SEO সম্পর্কে ভালোভাবে বুঝে থাকেন তাহলে গ্রে হ্যাট এসইও কি এবং কিভাবে করতে হয় সেটা বুঝা কঠিন হবে না। গ্রে হ্যাট SEO হলো ব্ল্যাক হ্যাট ও হোয়াইট হ্যাত এসইও এর সংমিশ্রণ, যেখানে প্রায় ৭০ শতাংশ White Hat SEO এবং বাকি ৩০ শতাংশ Black Hat SEO জড়িত থাকে।
দিন দিন এই ধরনের সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশনের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে, কারন এখানে পেনাল্টি খাওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে এবং তুলনামূলক সহজেই ওয়েবসাইটকে র্যাঙ্ক করানো যায়।
কীভাবে এসইও শেখা যায়?
SEO শেখার বিভিন্ন পদ্ধতি ও কৌশল আছে। অনলাইনে অনেক রিসোর্স পাওয়া যায় যেগুলো ব্যবহার করে এসইও শিখতে পারেন আর এই রিসোর্সগুলো বেশিরভাগ সময়ই ফ্রিতে পাওয়া যায়। ইউটিউবে এমন অনেক ভিডিও আছে (ইংরেজি, বাংলা, হিন্দি ভাষায়) যেখানে ধারাবাহিক ভাবে এসইও শেখানো হয়।
যেহেতু দিনে দিনে সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশনের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে তাই অনেক দেশি ও বিদেশি আইটি ফার্মগুলো সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশনের উপর প্রিমিয়াম কোর্স অফার করে থাকে। সেখানে ধীরে ধীরে ও হাতে-কলমে এটি শেখানো হয়।
বর্তমানে ফেসবুকে এমন কিছু গ্রুপ জনপ্রিয় হয়ে উঠতে শুরু করেছে যেখানে অনেক SEO Expert রয়েছে। আপনি চাইলে সেই গ্রুপগুলোতে যুক্ত হতে পারেন, তাদের পোস্ট ও গাইডলাইনগুলো ফলো করে ফ্রিতে এসইও এর উপর ভালো ধারনা পেতে পারেন।
চাইলে আপনি আমাদের এই ধারাবাহিক পর্বগুলোও পড়তে পারেন। এখানে আমরা এসইও এর ফান্ডামেন্টাল ও অ্যাডভান্স বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা করবো।
এসইও করে আয়
SEO করে প্রচুর পরিমাণে আয় করা যায়। এখন সব ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান অনলাইনে চলে আসছে। তাদের বিক্রয় বৃদ্ধির জন্য প্রতিদিন বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিনে বিজ্ঞাপন দেখানোর পাশাপাশি লিড জেনারেটের জন্য এসইও এক্সপার্টদের হায়ার করে থাকেন। যারা প্রফেশনালি এসইও এর কাজ করেন এবং এই ফিল্ডে বেশ ভালো তারা মাসিক দেড়/দুই লাখ টাকাও আয় করে থাকেন।
এটা হলো মুলত ফ্রিল্যান্সিং, এখানে আয়ের কোনো সীমা নেই। আপনি যত ভালো ভাবে কাজ করতে পারবেন আপনার চাহিদাও তত বেশি বৃদ্ধি পাবে। তাই যদি নিজেকে একজন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে গড়ে তুলতে চান তাহলে এটা সম্ভাবনাময় একটা পেশা।
নিজেকে প্রস্তুত করুন, কাজ শিখুন, কঠোর পরিশ্রম করুন, বিভিন্ন ছোট-বড় প্রজেক্টে কাজ শুরু করুন তাহলে সফলতা একদিন অবশ্যই ধরা দিবে।
অন পেজ এসইও কি? (WHAT IS ON-PAGE SEO)
অন পেজ এসইও হলো কয়েকটি ক্রিয়েটিভ কৌশলের সমন্বয়। এটা কোনো একক বা একটি কাজ না। আপনি যদি আপনার টার্গেটেড মানুষের কাছে ডিজিটাল মাধ্যমে পৌছাতে চান তাহলে অবশ্যই ওয়েবসাইটের এসইও করতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।
অন-পেজ এসইও হলো ওয়েবসাইটের বাইরে না গিয়ে সাইটের ভেতরেই কিছু কৌশল প্রয়োগ করে কোনো আর্টিকেল বা ওয়েবসাইটকে সার্চ ইঞ্জিনে র্যাঙ্ক করানো।
এজন্য কিছু কৌশল ও ট্রিক অ্যাপ্লাই করতে হয় আর্টিকেল লেখার সময় ও ওয়েবসাইট ডিজাইন করার সময়। আমরা মূলত সেই কৌশলগুলো সম্পর্কেই এখানে বিস্তারিত কথা বলবো।
অন পেজ এসইও কিভাবে করতে হয়? (HOW TO DO ON-PAGE SEO)
যেকোনো ওয়েবসাইটের হৃৎপিণ্ড হলো কন্টেন্ট। বলা হয়ে থাকে, কন্টেন্ট ইজ কিং (Content is king)। এবার নিশ্চয় বুঝতে পারছেন কোনো ওয়েবসাইটের জন্য কন্টেন্ট কতটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
আর এই কন্টেন্টকেই যদি সঠিকভাবে অপ্টিমাইজ করা যায় যেন সার্চ ইঞ্জিনে র্যাঙ্ক করে তাহলে এসইও এর বড় কাজটাই হয়ে যায়। পূর্বেই বলেছি অন পেজ এসইও বা অপ্টিমাইজেশন হলো কয়েকটি কার্যকরী কৌশলের সমন্বয়।
আর কন্টেন্ট অপ্টিমাইজের এই কৌশলগুলোর মধ্যে রয়েছে টাইটেল, ট্যাগ, মেটা ডেসক্রিপশন সহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাহলে কথা না বাড়িয়ে চলুন জেনে নেয় কিভাবে on page এসইও করতে হয়।
অন-পেজ অপ্টিমাইজেশন করার নিয়মঃ
কিওয়ার্ড রিসার্চ (Keyword Research)
on page এসইও এর প্রাথমিক কাজ হলো কিওয়ার্ড রিসার্চ করা। কোনো আর্টিকেলকে সার্চ ইঞ্জিনে র্যাঙ্ক করানোর জন্য একটা সঠিক কিওয়ার্ড নির্বাচন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। জনপ্রিয় SEO Expert, Brain Dean বলেন, “SEO is nothing without keyword research”
এ থেকেই আমরা একটা ধারণা পাই, সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশনের জগতে সঠিকভাবে কিওয়ার্ড রিসার্চ কতটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। মূলত দুইভাবে কিওয়ার্ড রিসার্চ করা যায়, একটি হলো কোনো টুল ব্যবহার করা এবং অন্যটি হলো ম্যানুয়ালি কিওয়ার্ড রিসার্চ করা।
অনেকেই টুল ব্যবহার করে কিওয়ার্ড রিসার্চ করলেও অল্প সংখ্যক মানুষই ম্যানুয়ালি কিওয়ার্ড রিসার্চ করে থাকে। তবে আমি দুইভাবেই কিওয়ার্ড রিসার্চ করতে পছন্দ করি।
কিওয়ার্ড রিসার্চ করার জন্য অনেক জনপ্রিয় ফ্রি ও পেইড টুলস আছে। সেগুলো হলো-
Ubersuggest
keyword Revealer
KeywordTool.io
Ahrefs
Keyword Surfer
Google Keyword Planner
Moz Keyword Explorer
Keyword Everywhere
Small SEO Tool
এগুলোই মূলত সবচেয়ে জনপ্রিয় কিওয়ার্ড রিসার্চ টুলস। কোনো আর্টিকেলকে র্যাঙ্ক করানোর জন্য লো কম্পিটিটিভ, বেশি সার্চ ভলিউম ও বেশি সিপিসিযুক্ত কিওয়ার্ড বাছাই করা উচিৎ। আপনার ওয়েবসাইট যদি একদম নতুন হয়ে থাকে তাহলে শুরুতেই এমন কোনো কিওয়ার্ড বাছাই করা উচিৎ না যেটার প্রতিযোগিতা অনেক বেশি।
কারণ, নতুন কোনো ওয়েবসাইটকে র্যাঙ্ক করানো অধিক কষ্টকর পুরোনো ওয়েবসাইটের চেয়ে। নতুন ওয়েবসাইটের ডিএ (Domain Authority), পিএ (Page Authority), ব্যাকলিংক ইত্যাদি কম থাকে।
আর সার্চ ইঞ্জিনে র্যাঙ্ক করানোর জন্য ডিএ, পিএ, ব্যাকলিঙ্ক খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটা নিয়ে অফ পেজ এসইও আর্টিকেলে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করবো। আর যেসব কিওয়ার্ডের এসইও ডিফিকাল্টি কম সেগুলোর উপর আর্টিকেল লিখলে খুব সহজেই তা গুগলে র্যাঙ্ক করে।
টাইটেল অপটিমাইজেশন (TITLE OPTIMIZATION)
on page এসইও এর দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো সঠিক নিয়মে টাইটেল অপ্টিমাইজ করা। আপনি যখন গুগলে কোনো কিওয়ার্ড লিখে সার্চ করেন তখন গুগল আপনার সামনে অনেক সাইটের কন্টেন্ট এনে হাজির করে। এখানে প্রত্যেকটি কন্টেন্টের টাইটেল আলাদা।
আপনি আর্টিকেলের জন্য যত সুন্দর করে টাইটেল লিখতে পারবেন গুগল বট আপনার আর্টিকেলকে তত বেশি সাপোর্ট দিবে সবার উপরে র্যাঙ্কে যাওয়ার জন্য। আর টাইটেল অবশ্যই আকর্ষনীয় ও আইক্যাচি হওয়া উচিৎ। তাহলে খুব সহজেই একজন ভিজিটরকে আপনার ওয়েবসাইটে আনতে পারবেন।
টাইটেলে অবশ্যই মেইন কিওয়ার্ডটা রাখার চেষ্টা করবেন। আর যদি টিপস টাইপের কোনো আর্টিকেল হয় তাহলে সংখ্যা উল্লেখ করবেন তাহলে টাইটেল আরো আকর্ষণীয় হয়। যেমনঃ অন পেজ এসইও এর ১০টি টিপস। এইধরনের টাইটেল দিতে চেষ্টা করবেন।
আর টাইটেল অবশ্যই ৬০ ক্যারেক্টারের বেশি হতে পারবে না। কেউ যখন কোনো কিওয়ার্ড লিখে গুগলে সার্চ করে তখন গুগলের সার্চ রোবট ৬০ ক্যারেক্টারের বেশি কোনো টাইটেল পড়ে না এবং সার্চ রেজাল্টে তা শো করে না। তাই টাইটেল ৬০ ক্যারেক্টারের বেশি যেন বড় না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
তবে খেয়াল রাখবেন টাইটেল যেন এমন না হয় যে, টাইটেল অনেক সুন্দর ও আইক্যাচি (Eye Catchy) এবং এরপর ভিজিটর যখন আর্টিকেলটি পড়বে তখন সে উপকারী বিষয়ে কিছুই পেলো না। তাহলে কোনো ভিজিটরই আপনার ওয়েবসাইটে দীর্ঘক্ষণ ধরে থাকবে না, যার ফলে ওয়েবসাইটের রিডিং ডিউরেশন (Reading Duration) কমে যাবে।
আর রিডিং ডিউরেশন কম হলে ওয়েবসাইটকে র্যাঙ্ক করানোর ক্ষেত্রে খুবই বিরূপ প্রভাব ফেলে। আর এই ধরনের টাইটেলকে বলা হয় ক্লিক বেট টাইটেল। তাই আর্টিকেলের টাইটেল শুধু আইক্যাচি ও আকর্ষণীয় হলেই হবে তা যেন সত্য ও পোস্টের সাথে সম্পৃক্ত হয়।
কিওয়ার্ড ডেনসিটি (KEYWORD DENSITY)
আপনি কি জানেন, কিওয়ার্ড ডেনসিটি কাকে বলে? একটা আর্টিকেলে মেইন কিওয়ার্ড বা ফোকাস কিওয়ার্ডের ঘনত্বকে কিওয়ার্ড ডেনসিটি বলে। অর্থাৎ আপনি যেই মূল কিওয়ার্ডকে কেন্দ্র করে আর্টিকেল লিখেছেন সেখানে মূল কিওয়ার্ডটা কতবার ব্যবহার করা হয়েছে তার পরিমাণকে কিওয়ার্ড ডেনসিটি (Keyword Density) বলা হয়।
সঠিকভাবে সম্পুর্ণ আর্টিকেল জুড়ে পরিমাণ মতো কিওয়ার্ড প্লেস করলে সেই আর্টিকেলকে গুগলে র্যাঙ্ক করাতে সহজ হয়। কিন্তু ইচ্ছে মতো যেখানে সেখানে জোর করে ফোকাস কিওয়ার্ড প্লেস করা যাবে না। এতে আর্টিকেলটি পড়ে মূল জিনিস বুঝা কষ্টকর হয়ে যাবে এবং তাতে রিডারস বিরক্ত হয়ে পড়বে।
আর একটা আর্টিকেলে ইচ্ছে মতো যেখানে সেখানে অনেক পরিমান কিওয়ার্ড বসালেই গুগল আপনাকে র্যাঙ্কিং দিবে না। বরং এটা করলে গুগল আপনার ওয়েবসাইটকে পেনাল্টি দিতে পারে। আর্টিকেলে অযাচিত কিওয়ার্ড বসালে সেটাকে কিওয়ার্ড স্টাফিং বলে যেটা ব্ল্যাক হ্যাট এসইও এর আওতাভুক্ত। আর সঠিকভাবে ওয়েবসাইট ও কন্টেন্টের সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন করতে হলে মোটেও ব্ল্যাক হ্যাট এসইও এর প্রশ্রয় নিলে হবে না।
কিওয়ার্ড যেন বেশি পরিমাণ না হয় আবার খুব অল্প পরিমাণেও না হয় সেটা পরিমাপ করার জন্য এসইও এক্সপার্টরা কিছু সাজেশন দেয়। তারা বলেন যে, কিওয়ার্ড ডেনসিটি ০.৫-০.৭% হওয়া ভালো। অর্থাৎ ১০০০ ওয়ার্ডের কোনো আর্টিকেল লিখলে সেখানে ৫-৭ বার ফোকাস কিওয়ার্ড ব্যবহার করা যায়, এর চেয়ে বেশি না।
ইমেজ অপটিমাইজেশন (IMAGE OPTIMIZATION)
একটা কথা প্রচলিত আছে, “One Picture Says Thousands Word”। মানে হলো, একটা ছবি হাজার শব্দ বলতে পারে। কোনো আর্টিকেলকে আরেকটু বেশি আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য ছবি ব্যবহার করা উচিৎ। র্যাঙ্কিং ফ্যাক্টর সম্পর্কে গুগল নিজেই বলেছে, আর্টিকেলে যত বেশি সম্ভব ছবি যুক্ত করা যাবে, ছবি ব্যবহার করলে কন্টেন্ট আর বেশি ভালোভাবে ইমেজ অপটিমাইজ হয়।
এবার নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন, আর্টিকেলকে গুগলের প্রথম পেজে আনার জন্য ইমেজ অনেক বেশি গুরুত্ব বহন করে। অনেক ক্ষেত্রে দেখবেন আপনার পোস্ট হয়তো গুগলের প্রথম পেজে র্যাঙ্ক করেনি কিন্তু ইমেজ হয়তো র্যাঙ্ক করে গেছে। আপনি ইমেজ থেকে ভালো পরিমাণ ট্রাফিক পেতে পারেন।
কিন্তু প্রশ্ন হলো, কিভাবে ইমেজ ইমেজ অপটিমাইজেশন করতে হয়? কয়েকটি উপায়ে ইমেজ ইমেজ অপটিমাইজেশন করা যায়। যেমনঃ ইমেজকে যথাসম্ভব ছোট সাইজের রাখতে হবে এবং WEBP ফরম্যাটে রাখতে পারলে ভালো তবে JPG রাখা যেতে পারে। তাহলে ওয়েবসাইটের স্পিড বৃদ্ধি পাবে। আর ইমেজ তৈরি বা ক্রপ করার সময় ল্যান্ডস্কেপ সাইজে তৈরি করবেন। পোস্টে ইমেজ যুক্ত করার সময় অল্টার ট্যাগ (Alter Tag) ও ক্যাপশন ব্যবহার করা উচিৎ।
এটাই ইমেজ ইমেজ অপটিমাইজেশনের মূল বিষয়। গুগল অনেক কিছু বুঝতে পারলেও কনো ইমেজ দেখে বুঝতে পারে না সেটা কি সম্পর্কে। তাই আপনার ছবিটা কিসের সেটা গুগল বটকে বুঝানোর একমাত্র উপায় হলো ক্যাপশন ও অল্টার ট্যাগ ব্যবহার করা।
আর্টিকেলের মূল বা ফোকাস কিওয়ার্ডটা ইমেজের অল্টার ও ক্যাপশনে রাখতে হয়। তাহলে সেটা ভালোভাবে ইমেজ অপটিমাইজ হবে।
মেটা ডেসক্রিপশন (META DESCRIPTION)
আপনি যখন ওয়েবসাইটে কোনো একটা আর্টিকেল পাবলিশ করেন এবং তা সার্চ ইঞ্জিন ক্রল করে তখন সার্চ ইনিন বটগুলো সম্পূর্ণ আর্টিকেল পড়ে দেখে না। বটগুলো মূলত সেই আর্টিকেলের মেটা ডেসক্রিপশন পড়ে বুঝে ফেলে আর্টিকেলটা কি সম্পর্কে লেখা হয়েছে এবং সেই অনুযায়ী কিওয়ার্ড দিয়ে সার্চ করলে আপনার আর্টিকেল সার্চ রেজাল্টে দেখায়। অন পেজ এসইও এর জন্য মেটা ডেসক্রিপশন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এটা হলো সম্পূর্ণ আর্টিকেলের একটা সারাংশ।
আপনি যখন গুগলে কোনো কিছু লিখে সার্চ করেন এবং অনেকগুলো ওয়েবসাইটের পোস্ট দেখতে পান তখন সেখানে মূলত আর্টিকেলের টাইটেলটি বড় করে দেখানো হয়। যেমনটা উপরের ছবিতে দেখতে পারছেন।
আর এই টাইটেলের নিচেই কিছু শব্দের প্যারাগ্রাফ থাকে, সেটাকে মেটা ডেসক্রিপশন (Meta Description) বলে। মেটা ডেসক্রিপশন বেশি সংখ্যক শব্দ ব্যবহার করা যাবে না।
সর্বোচ্চ ১৬০ ক্যারেক্টারের মেটা ডেস্ক্রিপশন লেখা যায়, এর বেশি ওয়ার্ড লিখলেও সার্চ ইঞ্জিন সেটা পড়ে দেখে না। আর এটা এমনভাবে লেখা উচিৎ যেন সার্চ ইঞ্জিন বট সেটা পড়লে খুব সহজেই বুঝতে পারে আপনার আর্টিকেলটা কোন বিষয়ে লেখা হয়েছে।
এজন্য এখানে একবার হলেও ফোকাস কিওয়ার্ড ব্যবহার করতে হবে। সেই সাথে সম্পূর্ণ আর্টিকেলকে ছোট করে সারাংশ আকারে লিখতে হবে। এখানে মূল কিওয়ার্ড ছাড়াও সেগুলোর কিছু সিমিলার কিওয়ার্ড ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে মেটা ডেসক্রিপশন আরো স্ট্রং হবে এবং সার্চ ইঞ্জিন খুব সহজেই আর্টিকেল সম্পর্কে ধারণা পেয়ে যাবে।
ইউআরএল অপ্টিমাইজেশন (URL OPTIMIZATION)
ইউআরএল অপ্টিমাইজেশন বলতে বোঝায় পার্মালিংককে সার্চ ইঞ্জিন ফ্রেন্ডলি করে লেখা। ধরুন আপনি “Best 5 Bike in Bangladesh 2022 ” কিওয়ার্ড নিয়ে একটা আর্টিকেল লিখছেন।
এজন্য আপনার পোস্টের ইউআরএল বা পার্মালিংক “sitename.com/best-bike-in-bd” এমন হওয়া উচিৎ। অর্থাৎ ইউআরএলে মূল কিওয়ার্ডটা রাখতে হবে আর কিওয়ার্ড বেশি বড় করা যাবে না। পার্মালিংক বেশি বড় হলে সেটাকে এসইও ফ্রেন্ডলি পার্মালিংক বলা যাবে না।
আর পার্মালিংকে সংখ্যা ব্যবহার করা উচিৎ না। আপনার ওয়েবসাটের লেখাগুলো যদি বাংলা ভাষায় হয় তাহলে পার্মালিংক বাংলায় লেখাই উত্তম। ওয়ার্ডপ্রেসে বাংলায় ইউআরএল লেখা গেলেও ব্লগারে বাংলায় লেখার সুযোগ নেই। তাই আপনি যদি ব্লগার ব্যবহার করেন তাহলে ইংরেজিতেই পার্মালিংক বানাতে হবে।
ইন্টারনাল লিংকিং (INTERNAL LINKING)
ইন্টারনাল লিংকিং হলো নিজের ওয়েবসাইটের কোনো একটি পেজের লিংক আরেকটি পেজে যুক্ত করা। এটা অন পেজ এসইও (On-Page SEO) তে খুব ভালো গুরুত্ব রাখে। আপনার একটি পোস্টে যদি সেই রিলেটেড কয়েকটা পোস্ট উল্লেখ করে দেন তাহলে অনেকেই সেখানে ক্লিক করে অন্য পোস্টটি পড়বে।
এতে করে ওয়েবসাইটের বাউন্স রেট কমে যাবে। আর যে ওয়েবসাইটে বাউন্স রেট বেশি এবং রিডিং ডিউরেশন কম সেগুলোকে গুগল র্যাঙ্কিং দিতে চায় না।
ইন্টারনাল লিংকিং করলে যেহেতু একটা পেজ থেকে আরেকটি পেজে ভিজিটর যায় সেহেতু তারা আপনার ওয়েবসাইটের ভেতরে ঘুরতে থাকে। এটা এসইও এর জন্য একটা ভালো দিক।
এক্সটারনাল লিংকিং (EXTERNAL LINKING)
এক্সটারনাল লিংকিং হলো আপনার ওয়েবসাইটে অন্য কোনো সাইটের লিংক করা। পোস্টে বিভিন্ন তথ্যের রেফারেন্স দিতে গিয়ে মূলত এটা ব্যবহার করা হয়।
বাহিরের ভালো ওয়েবসাইটের কোনো লিংক ব্যবহার করে গুগল ধারণা পায় যে, আর্টিকেলটা বেশ গবেষণা করে লেখা হয়েছে এবং এখানে অনেক তথ্য আছে। আর সেজন্য স্বভাবতই গুগল এই ধরনের পেজকে বেশি পুশ করে সার্চ রেজাল্টের প্রথম পেজে আসতে।
লোডিং স্পিড অপ্টিমাইজেশন (LOADING SPEED OPTIMIZATION)
On-Page SEO এর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলো ওয়েবসাইটের লোডিং স্পিড অপ্টিমাইজ করা। যে সাইট লোড হতে বেশি সময় নেয়, সেসকল ওয়েবসাইটে ভিজিটর বেশিক্ষণ থাকে না, বিরক্ত হয়ে সাইট থেকে বেরিয়ে যায়।
এতে করে সাইটের বাউন্স রেট বাড়ে এবং রিডিং ডিউরেশন কমে যায়। তাই যতটা সম্ভব সাইটকে ফাস্ট লোডেড এবং রেসপন্সিভ রাখা উচিৎ।
এজন্য ভালো হোস্টিং ব্যবহার করা সহ সঠিকভাবে ইমেজ অপ্টিমাইজ, রিসাইজ করতে হবে। যত্রতত্র ইমেজ ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে, অপ্রয়োজনীয় জাভা স্ক্রিপট মুছে ফেলতে হবে।
অন পেজ এসইও এর গুরুত্ব (IMPORTANCE OF ON-PAGE SEO)
কোনো ওয়েবসাইট বা ব্লগের ট্রাফিক বৃদ্ধির জন্য মূলত এসইও করা হয়ে থাকে। আর এসইও এর যতগুলো প্রকারভেদ আছে তার মধ্যে অন্যতম হলো On Page Search Engine Optimization।
আপনি যতই বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া থেকে ট্রাফিক আনেন না কেন এতে ওয়েবসাইটের অর্গানিক ট্রাফিক পাবেন না, আর গুগলে সার্চ করলেও কোনো পেজে আপনার ওয়বসাইট খুঁজে পাওয়া যাবে না।
তাই কোনো একটা ওয়েবসাইট, ব্লগ বা ইকমার্স প্রতিষ্ঠানকে মানুষের কাছে পরিচিত করানোর জন্য অন পেজ অপ্টিমাইজেশনের গুরুত্ব অনেক বেশি।
অফ পেজ এসইও কি? (WHAT IS OFF-PAGE SEO?)
ওয়েবসাইটের ভেতরে বিভিন্ন কৌশলগত কার্যক্রম করাকে অন পেজ SEO বলে। আর ওয়েবসাইটের বাইরে থেকে, মানে সাইটের অ্যাক্সেস ছাড়াই ওয়েবসাইটকে র্যাঙ্ক করানোর জন্য যেসব কৌশল অনুসরণ করা হয় তাকে অফ পেজ এসইও বলে।
অর্থাৎ কোনো একটা ওয়েবসাইটের অফ পেজ এসইও করার জন্য সেই ওয়েবসাইটের অ্যাডমিন প্যানেলের অ্যাক্সেস নেওয়ার প্রয়োজন নেই। আপনি চাইলে যেকারো ওয়েবসাইটেরই কাজ করে দিতে পারবেন, সেটা হোক নিজের বা অন্য কারোর। অফ পেজ এসইও করতে কতগুলো কৌশল অবলম্বন করতে হয়। নিচের অংশে আমরা বিস্তারিত শিখবো।
কিভাবে অফ পেজ এসইও করতে হয়? (HOW TO DO OFF PAGE SEO)
অফ পেজ এসইও করার কয়েকটি উপায় আছে। সেগুলোর মধ্যে থেকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও কার্যকরী উপায়গুলো ব্যাকলিংক তৈরি করা।
১. ব্যাকলিংক তৈরি (CREATE BACKLINKS)
ব্যাকলিংক হলো একটা ওয়েবসাইট থেকে অন্য একটি ওয়েবসাইটে রেফার করা, অর্থাৎ দুইটা ওয়েবসাইটের মধ্যে লিংকিং বা সংযোগ তৈরি করা। ব্যাকলিংক অফ পেজ এসইও এর জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ব্যাকলিংক প্রধানত দুই ধরনের হয়ে থাকে। একটি হলো ইনবাউন্ড ব্যাকলিংক (Inbound Backlink) এবং অন্যটি হলো আউটবাউন্ড ব্যাকলিংক (Outbound Backlink)।
ইনবাউন্ড লিংক কি? (INBOUND LINK)
যখন অন্য কোনো ওয়েবসাইট থেকে আপনার ওয়েবসাইটে ভিজিটর আসবে তখন সেটাকে ইনবাউন্ড ব্যাকলিংক বা আন্তঃমুখী ব্যাকলিংক বলে। যেকোনো ওয়েবসাইটকে সার্চ ইঞ্জিনে র্যাঙ্ক করানোর জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো এই ইনবাউন্ড ব্যাকলিংক। এতে প্রথমত অধিক ভিজিটর পাওয়া যায় অন্য ওয়েবসাইট থেকে আর দ্বিতীয়ত সার্চ ইঞ্জিনে খুব সহজেই ওয়েবসাইট র্যাঙ্ক করে।
আউটবাউন্ড লিংক কি? (OUTBOUND LINK)
আউটবাউন্ড ব্যাকলিংক হলো ইনবাউন্ড ব্যাকলিংকের ঠিক বিপরীত। অর্থাৎ যখন আপনার ওয়েবসাইট থেকে অন্য কারো ওয়েবসাইটে ট্রাফিক যাবে সেটা হলো আউটবাউন্ড ব্যাকলিংক বা বহির্মুখী ব্যাকলিংক।
সাধারনত কোনো বিষয়ে রেফারেন্স ব্যবহার করতে আউটবাউন্ড ব্যাকলিংক তৈরি করা হয়। আর যে ওয়েবসাইটের লিংককে আউটবাউন্ড করবেন সেই ওয়েবসাইটের জন্য এটা ইনবাউন্ড ব্যাকলিংক হবে।
ধরুন, আপনি কোনো একটা টপিকে আর্টিকেল লিখলেন এবং আপনার পাশাপাশি আরেকজনও একই বিষয়ে একই ধরনের আর্টিকেল লিখলো। দুইজনেই একই সময়ে ব্লগে আর্টিকেল পাবলিশ করলেন।
তাহলে বলুন তো, কার ওয়েবসাইটের আর্টিকেলটা গুগলে র্যাঙ্ক করবে? মাথার মধ্যে গুলাচ্ছে তাই তো? উত্তরটা বরং আমি দেই। দু’জনের মধ্যে যার ওয়েবসাইটের ডোমেইন অথোরিটি (DA- Domain Authority), পেজ অথোরিটি (PA- Page Authority) ও ব্যাকলিংক বেশি তার ওয়েবসাইটের লেখাটা আগে র্যাঙ্ক করবে। হ্যাঁ, আপনি যেটা পড়লেন সেটাই সঠিক।
শুধু অন পেজ SEO করে কোনো সাইটকে র্যাঙ্ক করা প্রায় অসম্ভব বলা চলে। এজন্য অন পেজ এসইও এর পাশাপাশি অফ পেজ এস ই ও তেও জোর দিতে হয়। আর আগেই বলেছি, অফ পেজ এসইও করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো ব্যাকলিংক তৈরি।
তবে শুধু ব্যাকলিংক তৈরি করলেই হবে না, সেগুলো ভালো অথোরিটি ওয়েবসাইট থেকে তৈরি করতে হবে। যে সাইটের ডিএ, পিএ বেশি এবং স্প্যাম স্কোর কম সেই সকল সাইট থেকে ব্যাকলিংক নিতে পারলে সেটা হবে কোয়ালিটি ব্যাকলিংক।
অফ পেজ এসইও করার উপায়
১.১ ফোরাম পোস্টিং (FORUM POSTING)
ফোরাম ওয়েবসাইট হলো এমন একটা কমিউনিটি সাইট যেখানে ব্যবহারকারী একটি নির্দিষ্ট বিষয় বা একাধিক বিষয়ে প্রশ্ন করতে, সমস্যার সমাধান চাইতে পারে। আর সেখানে যারা এই বিষয়ে এক্সপার্ট তারা উত্তর দিয়ে থাকে সেগুলোর।
আপনি যে বিষয়ে এক্সপার্ট এবং আপনার ওয়েবসাইটের টপিকের সাথে মিল রেখে কিছু জনপ্রিয় ফোরাম সাইটের যুক্ত হতে পারেন। সেখানে লক্ষাধিক মানুষ প্রতিনিয়ত প্রশ্ন করে থাকে। আবার অনেক সময়ে ব্লগ লেখার সুযোগ থাকে।
এই ধরনের প্রশ্নের উত্তর দেওয়া কিংবা ফোরামে ব্লগ লেখার সময় নিজের সাইটের ব্যাকলিংক তৈরি করে নেওয়ার সুযোগ থাকে।
হাই প্রোফাইল ও কোয়ালিটি ফোরাম সাইট থেকে ব্যাকলিংক নিতে পারলে সেটা আপনার ওয়েবসাইটের র্যাঙ্কিংয়ের ক্ষেত্রে অনেক সাহায্য করবে। বেশি ডিএ, পিএ ও ব্যাকলিংক রয়েছে এরকম ফোরামগুলো থেকে ব্যাকলিংক সংগ্রহ করার চেষ্টা করা উচিৎ। কিছু জনপ্রিয় ফোরাম পোস্টিং সাইট হলো-
- Warrior Forum
- HTML Forum
- Webmaster Forum
- SEO Chat Forum
- CNET Forum
- Digital Point Forum
১.২ প্রশ্ন-উত্তর সাইট (QUESTION AND ANSWER SITE)
অনলাইনে বেশ কিছু জনপ্রিয় প্রশ্ন-উত্তর ওয়েবসাইট রয়েছে। যেখানে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ মানুষ তাদের নানা সমস্যার সমাধান ও অজানা বিষয়ে জানতে প্রশ্ন করে থাকে। এবং সেখানে যেকোনো ব্যবহারকারী চাইলে সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে।
আবার কেউ চাইলে আর্টিকেল লিখতেও পারে। এসব ওয়েবসাইট থেকে প্রতিদিন অনেক বেশি পরিমাণ ভিজিটর পাওয়া যায়। এরকম সাইটে প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সময় নিজের ওয়েবসাইটের কোনো পোস্টের লিংক জুড়ে দেওয়া যায় আবার প্রশ্নের উত্তরের শেষে বিস্তারিত জানানোর জন্য রিলেটেড কোনো আর্টিকেলের লিংক দেওয়া যায়। কিন্তু সরাসরি লিংক জুড়ে দিলে তা স্প্যামিং হিসেবে ধরতে পারে। তাই অ্যাঙ্কর ট্যাগ দিয়ে ব্যাকলিংক বানিয়ে নিতে হবে।
ফোরাম ওয়েবসাইট আর প্রশ্ন-উত্তর ওয়েবসাইট কিছুটা একই ধরনের। কিছু জনপ্রিয় প্রশ্ন-উত্তর ওয়েবসাইট হলো-
- Quora
- Yahoo Answer
- Math Overflow
- Health Tap
- Linked Answer
- QNA Rediff
- Amazon AskVille
- Answer Bag
- Bissoy Answer
১.৩ গেস্ট পোস্টিং (GUEST POSTING)
গেস্ট পোস্টিং বলতে বুঝায় অতিথি লেখক হিসেবে অন্যের ওয়েবসাইটে আর্টিকেল পোস্ট করা। এটা করাই হয় মূলত নিজের ওয়েবসাইটের ব্যাকলিংক নেওয়ার জন্য। যেসব ওয়েবসাইটে গেস্ট পোস্টের ব্যবস্থা থাকে তাদের এজন্য একটা নির্দিষ্ট নীতিমাল থাকে।
সেই নিতিমালা মেনে ব্যাকলিংকিং করলে তারা এতে বাধা দেয় না। তবে কোনোভাবেই অন্যের ওয়েবসাইটের নীতি লঙ্ঘন করা যাবে না কোনো অবস্থাতেই।
গেস্ট পোস্ট করার জন্য একজন ভালো কন্টেন্ট রাইটার হতে হবে বা একজন ভালো রাইটারকে দিয়ে তা লিখিয়ে নিতে হবে। তা না হলে অনেক সময় গেস্ট পোস্ট অ্যাপ্রুভ করে না অ্যাডমিন পক্ষ থেকে।
আর এমন টপিকে গেস্ট পোস্ট লিখতে হবে যেটা আপনার ওয়েবসাইটের নিশের সাথে সম্পর্কিত। তা না হলে গেস্ট পোস্ট করে কোনো লাভ হবে না, কোয়ালিটি ব্যাকলিংক ও ট্রাফিক কোনোটাই পাবেন না।
ভালো গেস্ট পোস্ট করলে সেটা মানুষের কাছে আপনার জনপ্রিয়তা বাড়িয়ে দিবে। এতে আপনার প্রতি মানুষের আস্থা বাড়বে এবং নিজের সাইটে নিয়মিত সেই সকল মানুষদেরকে ভিজিটর হিসেবে পাবেন। এছাড়াও গেস্ট পোস্টিং এর আরো অনেক প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
তবে গেস্ট পোস্ট লিখতে গেলে কিছু বিষয়ে সতর্ক হওয়া জরুরি। যেমন অপ্রাসঙ্গিক কোনো লিংকিং করা যাবে না, উপকারী নয় বা কাজে আসবে না এরকম আর্টিকেল লেখা যাবে না কারণ মানুষ এগুলো পড়ে না।
এতে শুধু আপনার সময়টাই নষ্ট হবে। ব্যাকিলিংক তৈরি ক্ষেত্রে রিলেটেড পোস্ট হিসেবে লিংক করা যায়, তা না হলে অবশ্যই প্রাসঙ্গিক বাক্যে ব্যাকলিংক তৈরি করতে হবে। কিছু জনপ্রিয় গেস্ট পোস্টিং ওয়েবসাইট হলো-
- HubSpot
- Mashable
- Get Response
- Feter Freaks
১.৪ প্রোফাইল ব্যাকলিংক (PROFILE BACKLINK)
প্রোফাইল ব্যাকলিংক হলো নিজের প্রোফাইলে ওয়েবসাইটের ব্যাকলিংক তৈরি করা। আমাদের প্রয়োজনের খাতিরে এমন অনেক ওয়েবসাইটে অ্যাকাউন্ট খুলি যেখানে নিজের একটা পাবলিক প্রোফাইল তৈরি করার সুযোগ থাকে।
এবং সেটা অন্যান্য ইউজাররা দেখতে পায়। এরকম প্ল্যাটফর্মগুলোতে যদি আপনার অ্যাকাউন্ট থাকে তাহলে সেখানে ব্যাকলিংক করতে পারেন।
সেই সাইটে আপনার কার্যক্রম ভালো হলে, মানুষ আপনার প্রতি আগ্রহী হলে এবং জনপ্রিয়তা পেলে সেই ব্যাকলিংক থেকেও ভিজিটর আনা যায়। আর এটা আপনার সাইট বা ব্লগের জন্য ডু-ফলো ব্যাকলিংক হিসেবে কাজ করবে। তাই এটা র্যাঙ্কিংয়ে বেশ ভালো সহায়তা করবে।
২. সোশ্যাল মিডিয়া এংগেজমেন্ট (SOCIAL MEDIA ENGAGEMENT)
সোশ্যাল মিডিয়া এংগেজমেন্ট মানে হলো বিভিন্ন সোশ্যাল প্ল্যাটফর্ম থেকে আপনার ওয়েবসাইটে ভিজিটর আনা। এটি বেশ ভালো ভূমিকা রাখে। সোশ্যাল মিডিয়া এঙ্গেজমেন্ট ভালো হলে সেই ওয়েবসাইট দ্রুত র্যাঙ্ক করানো সম্ভব হয়।
এজন্য আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটের পোস্টগুলো বিভিন্ন জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে নিয়মিত শেয়ার করতে হবে, কিন্তু মনে রাখতে হবে যে কোনো অবস্থাতেই স্প্যামিং করা যাবে না।
স্প্যামিং করলে অনেক সাইট ডোমেইন ব্লক করে দেয়, যা আপনার সাইটের জন্য নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
প্রতিটি জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে ওয়েবসাইটের নামে অ্যাকাউন্ট বা বিজনেস পেজ খুলুন। প্রোফাইলটা সম্পূর্ণভাবে সেটাপ করে সেখানে নিয়িমিত ওয়েবসাইটের পোস্ট শেয়ার করতে থাকুন।
অনেক জনপ্রিয় ফেসবুক গ্রুপেও ওয়েবসাইটের লিংক শেয়ার করা যায় তাদের গাইডলাইন মেনে। এতে করে বেশ ভালো পরিমাণ ভিজিটর পাওয়া যায় এবং মানুষের কাছে সাইটের জনপ্রিয়তা ও পরিচিতি বাড়ে।
সোশ্যাল মিডিয়া থেকে ভিজিটর পাওয়ার জন্য পেইড ক্যাম্পেইন করতে পারেন। তবে তা ফেসবুক অ্যাড ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে না। অনেক গ্রুপে ওয়েবসাইটের লিংক শেয়ার করার অনুমোদন আছে তবে তার জন্য একটা ফি দিতে হয়। এরকম গ্রুপ খুঁজে অ্যাডমিনের সাথে যোগাযোগ করে সাইটের লিংক পোস্ট করে সেখান থেকে ভিজিটর নিতে পারেন।
৩. ভিডিও মাধ্যম ব্যবহার (USING VIDEO IN SOCIAL MEDIA)
এখনকার সময়ে সবচেয়ে জনপ্রিয় কন্টেন্ট হলো ভিডিও। প্রতিদিন লাখো লাখো ভিডিও আপলোড হচ্ছে ইন্টারনেটে। আর সবচেয়ে জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং ওয়েবসাইট হলো ইউটিউব।
যেকোন কোম্পানিকে ভালোভাবে ও সহজে ব্র্যান্ডিং করার জনপ্রিয় মাধ্যম হলো ইউটিউব। আর ভিডিও কন্টেন্ট প্রচুর পরিমাণে ভাইরাল হয়। তাই আর দেরি না করে নিজের ওয়েবসাইটের নামে ইউটিউব ও ফেসবুকে একটা করে চ্যানেল ও পেজ খুলে ফেলুন।
এরপর ওয়েবসাইটের টেক্সট কন্টেন্টগুলোকে ভিডিও আকারে প্রকাশ করুন। ভিডিওর ডেস্ক্রিপশনে বা ক্যাপশনে সেই ভিডিও সম্পর্কিত একটা আর্টিকেলের লিংক জুড়ে দিন। এতে করে প্রতিনিয়ত ভালো পরিমাণ ভিজিটর পাওয়া যায় ওয়েবসাইটে।
৪. সোশ্যাল মিডিয়া বুকমার্কিং (SOCIAL MEDIA BOOKMARKING)
বর্তমান সময়ের আরেকটি জনপ্রিয় ব্র্যান্ডিং কৌশল হলো সোশ্যাল মিডিয়া বুকমার্কিং করা। সোশ্যাল মিডিয়া বুকমার্কিং হলো এমন ওয়েবসাইট যেখানে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের ওয়েবসাইট বা ওয়েবসাইটের কোনো পেজ বুকমার্ক করে রাখতে পারে।
এসকল সাইট থেকে অনেক বেশি ট্রাফিক পাওয়া যায় এবং কোয়ালিটি ডু-ফলো ব্যাকলিংক তৈরি হয়। সবচেয়ে জনপ্রিয় কিছু সোশ্যাল মিডিয়া বুকমার্কিং সাইট হলো-
- Tumblr
- Delicious
- Storify
- Digg
- MySpace
- এতক্ষণে আমরা অফ পেজ এসইও সম্পর্কে বেশ আলোচনা করলাম। এটি মূলত ব্যাকলিংক তৈরি করাকেই বুঝাই। এছাড়াও কিছু অন্যান্য বিষয় আছে যেগুলো কোনো না কোনো ভাবে ব্যাকলিংক বা ট্রাফিক জেনারেটের মধ্যেই পরে।