জন্ম নিবন্ধন যাচাই করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন সনদের তথ্য যাচাই বা চেক করতে আসলে খুব বেশী কাগজপত্রের প্রয়োজন হবে না। অনলাইনে এই তথ্য চেক করার জন্য শুধুমাত্র জন্ম নিবন্ধন সনদের কাগজটি থাকলেই যথেষ্ট।
ধাপ-১ঃ
মোবাইলে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করার জন্য প্রথমেই জন্ম নিবন্ধন সনদটি হাতের কাছে রাখতে হবে। আপনি চাইলে মূল জন্ম নিবন্ধনের কাগজটি, তার ছবি, ফটোকপি যে কোনটাই ব্যবহার করতে পারবেন।
জন্ম নিবন্ধন অনলাইন থেকে বের করবেন কিভাবে!!
জন্ম নিবন্ধন যাচাই, সংশোধন ও ডাউনলোড!!
জন্ম নিবন্ধন বাতিল করার নিয়ম!!
ধাপ-২ঃ
জন্ম নিবন্ধন সনদ তৈরী, যাচাই ও এই সংক্রান্ত সকল কাজের জন্যই সরকারি ওয়েবসাইট রয়েছে। জন্ম নিবন্ধন সনদ অনলাইনে যাচাই করার জন্য সরকারি নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। তাই জন্ম নিবন্ধন অনলাইনে চেক করতে প্রথমেই এই লিংকে https://everify.bdris.gov.bd/ প্রবেশ করতে হবে।
ধাপ-৩ঃ
নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে প্রবেশ করার পর প্রথম ঘরে জন্ম নিবন্ধন সনদে লেখা ১৭ ডিজিটের জন্ম নিবন্ধন নং লিখতে হবে। এই নম্বরটি কোন কোন জন্ম নিবন্ধন সনদে ব্যক্তিগত পরিচিতি নং অথবা পার্সোনাল আইডেন্টিফিকেশন নং (Personal identification no) নামেও থাকতে পারে।
ধাপ-৪
পরবর্তী ঘরে অর্থাৎ দ্বিতীয় ঘরটিতে জন্ম নিবন্ধনে উল্লেখিত জন্ম তারিখ লিখতে হবে। জন্ম তারিখটি লেখার সময় বছর-মাস-দিন এই আকারে লিখতে হবে। এছাড়াও কেউ চাইলে জন্ম তারিখ দেওয়ার ঘরে ক্লিক করার পর নিচে ভেসে উঠা ক্যালেন্ডার থেকেও তারিখটি নির্ধারণ করে দিতে পারবেন।
ধাপ-৫ঃ
প্রয়োজনীয় তথ্য দেওয়া শেষ হলে নিচে থাকা ক্যাপচাটি সমাধান করে ফলাফল নিচের ঘরে লিখতে হবে।
ধাপ-৬ঃ
উপরের দুটি তথ্য সঠিকভাবে দেওয়া হয়ে গেলে এবং ক্যাপচা দেওয়া শেষ হলে ‘অনুসন্ধান’ অথবা ‘search’ বাটনটিতে ক্লিক করতে হবে।
ধাপ-৭ঃ
বাটনটিতে ক্লিক করার পর এবং যদি উপরের তথ্য ঠিকভাবে দেওয়া হয়ে থাকে তাহলে জন্ম নিবন্ধনের তথ্যগুলো প্রদর্শন করা হবে। এখান থেকে চাইলে জন্ম নিবন্ধনের তথ্যগুলো ঠিক আছে কিনা তা যাচাই করে নেওয়া যাবে।
কিন্তু যদি ক্লিক করার পর নতুন কোন পৃষ্ঠা ওপেন না হয় এবং “error” অথবা “No Record Found” লেখা পৃষ্ঠা উঠে আসে তাহলে বুঝতে হবে যে ঐ জন্ম নিবন্ধনটির তথ্য অনলাইনে নেই। সেই ক্ষেত্রে ঐ ব্যক্তিকে পুনরায় জন্ম নিবন্ধন সনদ তৈরী করতে হবে।
জন্ম নিবন্ধন সংশোধন
জন্ম নিবন্ধন সনদের সকল তথ্য বর্তমানে ডিজিটালাইজ করা হয়েছে। এর ফলে পুরানো অনেক জন্ম নিবন্ধনের তথ্যই অনলাইন ডাটাবেজে যুক্ত করা হয়েছে। এছাড়াও বর্তমানের অফলাইনে করা জন্ম নিবন্ধনের তথ্যগুলোও অনলাইন ডাটাবেজে যুক্ত করা হয়। কিন্তু এই কাজগুলো সাধারণত হাতে লেখা নথি থেকে অপারেটররা ডাটাবেজে যুক্ত করে থাকেন। যাতে ভুল হবার অনেক সম্ভাবনা থেকে যায়। তাই বর্তমানে অধিকাংশ জন্ম নিবন্ধন সনদেই কোন না কোন ভুল হয়ে থাকে। তথ্য ভুল থাকায় পরবর্তী অন্যান্য কাজে জন্ম নিবন্ধন ব্যবহার করার সময় যেকোনো সমস্যা তৈরী হতে পারে। সেকারণে জন্ম নিবন্ধন সনদের ভুল শোধরানো খুবই প্রয়োজনীয় একটি বিষয়। এখানে জন্ম নিবন্ধন সনদের তথ্য সংশোধনের পদ্ধতি দেখানো হলো।
জন্ম নিবন্ধন সংশোধনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
জন্ম নিবন্ধন সনদ সংশোধনের ক্ষেত্রে প্রতিটি ভিন্ন তথ্য সংশোধনের জন্য আলাদা আলাদা কাগজপত্র প্রয়োজন হবে। একাধিক তথ্য সংশোধনের জন্য একাধিক ঐ তথ্য সংশ্লিষ্ট কাগজ সরবরাহ করতে হবে। তাই অবশ্যই জন্ম নিবন্ধন সংশোধনের আগে নির্ধারিত নিবন্ধকের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে নির্দিষ্ট তথ্য সংশোধনের জন্য কোন কোন কাগজ প্রয়োজন হবে তা জেনে নেওয়া উচিত এখানে আপনাদের সুবিধার জন্য কাগজপত্রের তালিকা দেওয়া হলো।
পিতামাতার নাম বা সংশ্লিষ্ট কোন তথ্য পরিবর্তন করার জন্যঃ
- পিতার অথবা মাতার জন্ম নিবন্ধন সনদ ও এর ফটোকপি।
- পিতার অথবা মাতার জাতীয় পরিচয়পত্র ও এর ফটোকপি।
- পিতার অথবা মাতার পাসপোর্টের স্ক্যান করা ছবি।
- পিতার অথবা মাতার পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
- পিতার অথবা মাতার মৃত্যু সনদ।
নিজের নামের বানান অথবা জন্ম তারিখ সংশোধনের ক্ষেত্রেঃ
- নিবন্ধনাধীন ব্যক্তির জাতীয় পরিচয়পত্র।
- নিবন্ধনাধীন ব্যক্তির এসএসসি সার্টিফিকেটের স্ক্যান করা কপি।
- নিবন্ধনাধীন ব্যক্তির পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
- নিবন্ধনাধীন ব্যক্তির ইপিআই কার্ড।
- নিবন্ধনাধীন ব্যক্তি যে চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে জন্ম হয়েছে তার ছাড়পত্র।
ঠিকানা পরিবর্তনের ক্ষেত্রেঃ
স্থায়ী ঠিকানার প্রমাণঃ
- প্রমাণ হিসেবে ঐ এলাকার কাউন্সিলর বা চেয়ারম্যান থেকে নেওয়া প্রত্যয়ন পত্র।
- স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে ঘোষিত আবাসস্থলের বিপরীতে হালনাগাদ কর পরিশোধের প্রমাণপত্র।
বর্তমান ঠিকানার প্রমাণঃ
- ঠিকানার ইউটিলিটি বিলের ফটোকপি।
এই কাগজপত্রগুলো প্রয়োজন ও লভ্যতা অনুসারে একটি বা একটির বেশী প্রয়োজন হতে পারে।
জন্ম নিবন্ধন সংশোধনের পদ্ধতি
জন্ম নিবন্ধন সংশোধনের কাজটি তুলনামূলক ভাবে কিছুটা বড় হলেও বেশ সহজ। জন্ম নিবন্ধন সংশোধনের জন্য ৪ বারের বেশী আবেদন করা যায় না। সেকারণে এই কাজটি বেশ সাবধানতার সাথে করা উচিত। নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করে যে কেউ সহজেই জন্ম নিবন্ধন নির্ভুলভাবে সংশোধন করে নিতে পারবেন।
ধাপ-১ঃ
জন্ম নিবন্ধন তৈরীর কাজটি চাইলে অফলাইনে করা যায়। কিন্তু এটি চেক করা, যাচাই করা ও ভুল সংশোধনের মত কাজগুলো অনলাইনে করতে হয়। তাই জন্ম নিবন্ধন সনদ সংশোধনের জন্য ইন্টারনেট সংযুক্ত কোন একটি মোবাইল বা কম্পিউটার থেকে আবেদনের কাজ করতে হবে।
ধাপ-২ঃ
জন্ম নিবন্ধন সংশোধনের জন্য সরকারি নির্দিষ্ট ওয়েবসাইট রয়েছে। তাই প্রথমে যেকোনো ব্রাউজার থেকে ঐ ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হয়। জন্ম নিবন্ধন সনদ সংশোধনের জন্য এই লিংকে https://bdris.gov.bd/br/correction প্রবেশ করুন।
ধাপ-৩ঃ
এই লিংকে প্রবেশ করার পর দুটি খালি দেখা যাবে। যার প্রথমটিতে জন্ম নিবন্ধন সনদের নাম্বার লিখতে হবে। এই নাম্বারটি ব্যক্তিগত পরিচিতি নং বা পারসোনাল আইডেন্টিফিকেশন নং (personal identification no) নামে জন্ম নিবন্ধন সনদে থাকতে পারে। এই ঘরটি পূরণ করার পর পরবর্তী ঘরটি পূরণ করতে হবে।
ধাপ-৪ঃ
পরবর্তী ঘরে জন্ম নিবন্ধনে উল্লেখিত জন্ম তারিখটি লিখতে হবে। এছাড়াও কেউ চাইলে এখানেও জন্ম তারিখ দেওয়ার ঘরে ক্লিক করার পর নিচে ভেসে উঠা ক্যালেন্ডার থেকেও তারিখটি নির্ধারণ করে দিতে পারবেন।
ধাপ-৫ঃ
প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো দেওয়ার পর নিচের অনুসন্ধান বাটনে ক্লিক করতে হবে। অনুসন্ধান বাটনে ক্লিক করার পর নিচে জন্ম নিবন্ধনের কিছু তথ্য দেখানো হবে। এখানের তথ্যগুলো ঠিক ভাবে চেক করে নেওয়া জরুরী।
ধাপ-৬ঃ
তথ্যগুলো ঠিক থাকলে পাশে থাকা নির্বাচন করুন বাটনটিতে ক্লিক করে পরবর্তী পৃষ্ঠায় যেতে হবে।
এরপর একটি নিশ্চিতকরণ বার্তা দেখানো হবে। সেখান থেকে “কনফার্ম” বাটনটিতে ক্লিক করতে হবে।
ধাপ-৭ঃ
এরপর নতুন একটি পৃষ্ঠা আসবে সামনে। এই পৃষ্ঠাটিতে নিবন্ধন কার্যালয়ের ঠিকানা দিতে হবে।
ঠিকানাতে প্রথমে দেশ নির্বাচন করতে হবে। দেশের অভ্যন্তরীণ কোন কার্যালয় থেকে সংশোধনের কাজটি করতে চাইলে বাংলাদেশ নির্বাচন করতে হবে। এবং দেশের বাইরের কোন দূতাবাস থেকে করতে চাইলে ঐ দেশের নাম দিতে হবে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ হলে নিবন্ধন কার্যালয়ের বিস্তারিত ঠিকানা দিতে হবে। এক্ষেত্রে প্রথম ঘরটিতে নিবন্ধন কার্যালয়টি কোন বিভাগের অধীনে তা নির্বাচন করতে হবে। বিভাগের পরবর্তী ঘরগুলোতে বিভাগ অনুযায়ী জেলা, উপজেলা, পৌরসভা বা ইউনিয়ন বা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন করতে হবে। এরপর স্বয়ংক্রিয়ভাবে কোন অফিসে যেতে হবে তা উল্লেখ করে দেওয়া হবে।
এই ঘরগুলো পূরণ করে নিবন্ধন কার্যালয়ের ঠিকানা পাওয়ার পর পরবর্তী বাটনটিতে ক্লিক করতে হবে।
ধাপ- ৮ঃ
এরপর সামনে আসা পৃষ্ঠাটিই হচ্ছে জন্ম নিবন্ধন সংশোধনের মূল পৃষ্ঠা। এখান থেকে জন্ম নিবন্ধনের অধিকাংশ ভুলই সংশোধন করা যায়।
ভুল সংশোধনের জন্য প্রথমে সংশোধিত তথ্যের বিষয় নির্বাচন করতে হবে। এজন্য উপরের দিকেই থাকা ‘বিষয়’ অপশনটিতে ক্লিক করলে কি কি বিষয় সংশোধন করা যাবে তার একটি তালিকা সামনে চলে আসবে। এখান থেকে প্রয়োজনীয় অপশনটি নির্বাচন করতে হবে।
সঠিক অপশনটি নির্বাচন করার পর এর পাশেই নতুন একটি ঘর ভেসে উঠবে। এই ঘরটিতে সংশোধিত তথ্যটি লিখতে হবে। এক্ষেত্রে নামের বানান ভুল হলে সঠিক নামের বানান দিতে হবে। জন্ম তারিখ ভুল হলে সঠিক তারিখ দিতে হবে। এভাবে অন্যান্য ভুলের ক্ষেত্রে সঠিক অপশনটি নির্বাচন করতে হবে বা তথ্যটি লিখতে হবে।এরপর তার পাশের ঘরে সংশোধনের কারণ উল্লেখ করতে হবে। সংশোধনের কারণ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অপারেটরের ভুল লিপিবদ্ধ করাই হয়ে থাকে। তাই এখান থেকে ‘ভুল লিপিবদ্ধ করা হয়েছিল’ নির্বাচন করতে হবে।এছাড়া জন্ম নিবন্ধনে যখন পিতামাতার নামে ভুল থেকে থাকে তাহলে স্বাভাবিকভাবে অন্যান্য ভুলের মতো সেটি শোধরানো যাবে না। পিতামাতার নামে ভুল থাকলে তা শোধরাতে হলে নিম্নলিখিত কাজগুলো করতে হবে।
- যদি পিতা বা মাতার নাম সংশোধনের ক্ষেত্রে পিতা বা মাতার জন্ম নিবন্ধন নম্বর থাকলে প্রথমে তাদের জন্ম নিবন্ধন নম্বর দিতে হবে। এরপর অন্যান্য জন্ম নিবন্ধন সংশোধনের মতো তাদের জন্ম নিবন্ধন তথ্য সংশোধন এর আবেদন করে তাদের নাম সংশোধন করতে হবে।
- পিতা বা মাতার জন্ম নিবন্ধন নম্বর না থাকলে এবং জন্ম তারিখ ০১/০১/২০০০ এর পূর্বে হলে, জন্ম নিবন্ধন তথ্য সংশোধনের আবেদন করার সময় আপনার পিতা বা মাতার নাম সংশোধন করা যাবে। সেক্ষেত্রে পিতা বা মাতা মৃত হলেও তাদের মৃত্যুর কোন প্রমাণপত্র দাখিল করতে হবে না
- পিতা বা মাতার জন্ম নিবন্ধন নম্বর না থাকলে এবং পিতা বা মাতা মৃত হলে এবং জন্ম তারিখ ০১/০১/২০০ এর পরে হলে, জন্ম নিবন্ধন তথ্য সংশোধনের আবেদন করার সময় পিতা বা মাতার নাম সংশোধন করা যাবে। সেক্ষেত্রে পিতা বা মাতার মৃত্যুর প্রমাণপত্র দাখিল করতে হবে।
ধাপ- ৯ঃ
এরপর যদি একটিরও বেশি ভুল থেকে থাকে তাহলে এর নিচেই থাকা ‘আরো তথ্য সংযোজন করুন’ অপশনে ক্লিক করে একই পদ্ধতিতে অন্য ভুল তথ্যগুলোর সংশোধন করা তথ্যগুলো সংযুক্ত করতে হবে।
ধাপ-১০ঃ
এছাড়াও কেউ কোন তথ্য সঠিক থাকা সত্ত্বেও খেয়াল না করার কারণে ভুল ধারণা করে নতুন তথ্য দিয়ে দিতে পারে। তাই এরপর সঠিকটি দিয়ে পরিবর্তন করার চেষ্টা করার পরেও চাইলে একদম ডানদিকে থাকা ‘Delete’ বাটনটিতে ক্লিক করে ঐ তথ্য পরিবর্তনটি বাতিল করে দিতে পারবে।
ধাপ-১১ঃ
ভুল তথ্য সংশোধনের জন্য তথ্য দেওয়া শেষ হলে জন্মস্থানের ঠিকানা দিতে হবে। ঠিকানাতে দেশের নাম, বিভাগ, জেলা, উপজেলা, পৌরসভা বা ইউনিয়ন বা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন করতে হবে। এরপর জন্মস্থানের ডাকঘরের নাম, গ্রাম বা পাড়া বা মহল্লা ও বাসার নম্বর একইসাথে বাংলা ও ইংরেজিতে লিখতে হবে। এই তথ্যগুলো অবশ্যই জন্ম নিবন্ধন সনদ তৈরীর সময় দেওয়া জন্মস্থানের তথ্যের সাথে মিল রেখে দিতে হবে।
ধাপ-১২ঃ
এরপর একইভাবে স্থায়ী ঠিকানা ও বর্তমান ঠিকানা লিখতে হবে।
ধাপ-১৩ঃ
এরপর জন্ম নিবন্ধন সংশোধনের চেষ্টা করা আবেদনকারীর তথ্য জমা দিতে হবে। এজন্য প্রথমে আবেদনকারী ব্যক্তি জন্ম নিবন্ধনের ব্যক্তির সাথে কিভাবে সম্পর্কিত তা উল্লেখ করতে হবে। এরপর আবেদনকারীর নাম, আবেদনকারীর ঠিকানা, আবেদনকারীর মোবাইল নম্বর এবং আবেদনকারীর ইমেইল লিখতে হবে।
ধাপ-১৪ঃ
আবেদনকারী যদি জন্ম নিবন্ধনের প্রকৃত মালিক বা তার পিতা-মাতা ছাড়া অন্য কেউ হয়ে থাকেন তাকে নিচের আরো অতিরিক্ত দুটি ঘর পূরণ করতে হবে। ঘরগুলোর প্রথমটিতে আবেদনকারীকে তার জন্ম নিবন্ধন নং লিখতে হবে। এবং দ্বিতীয়টিতে আবেদনকারীকে তার জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর লিখতে হবে।
ধাপ-১৫ঃ
এইসব তথ্য দেওয়ার পর সংশোধিত তথ্যের জন্য প্রমাণ পেশ করতে হবে। প্রমাণ হিসেবে বিভিন্ন তথ্যের জন্য বিভিন্ন কাগজপত্র প্রয়োজন হবে। এক্ষেত্রে উপরে উল্লিখিত ‘প্রয়োজনীয় কাগজপত্র’ ঘরে কোন তথ্য পরিবর্তনের জন্য কোন কাগজপত্র পেশ করতে হবে তার তালিকা দেওয়া আছে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্রগুলো সংযোজন করার জন্য প্রথমে কাগজপত্রগুলোর স্ক্যান কপি তৈরী করে নিতে হবে। এখানে একটি উল্লেক্ষ্য বিষয় হচ্ছে স্ক্যান কপি করা ছবিগুলোর সাইজ সর্বোচ্চ ৯৭৬ কিলোবাইট হতে পারবে। তাই ছবিগুলোর সাইজ এর চাইতে বেশী হলে ছবিটিকে রিসাইজ করে ৯৭৬ কিলোবাইটের কম আকারে নিতে হবে। এরপর জন্ম নিবন্ধন সনদ সংশোধনের ওয়েবসাইটের ঐ পৃষ্ঠার ‘সংযোজন’ বাটনটিতে ক্লিক করতে হবে।এরপর নির্দিষ্ট স্ক্যান করা ছবিটি নির্বাচন করতে হবে। ছবিটি নির্বাচন করার পর এর পাশের ঘর থেকে নথিটির ধরন নির্বাচন করতে হবে।এরপর প্রয়োজনে ‘সাব টাইপ’ লেখা ঘরটি থেকেও ধরন নির্বাচন করে দিতে হবে। এরপর ডান দিকে থাকা ‘Start’ বাটনটিতে ক্লিক করলেই ফাইলটি আপলোড হয়ে যাবে।
এছাড়া এখানে একাধিক প্রমান পেশ করতে চাইলে সংযোজন বাটনটিতে আবারও ক্লিক করে একই ভাবে বাকি প্রমাণ গুলোও পেশ করা যাবে।
ধাপ-১৬ঃ
এখানে আবেদনকারীকে জন্ম নিবন্ধন সনদ সংশোধনের মূল্য পরিশোধ করার মাধ্যম বাছাই করতে হবে। এখানে চাইলে ‘Pay in cash’ বা ‘ফি আদায়’ নির্বাচন করে জন্ম নিবন্ধন সনদ তোলার সময় খরচটি পরিশোধ করা যাবে। অথবা বাংলাদেশ ব্যাংকের সেবা ‘চালান’ নির্বাচন করে এর মাধ্যমে টাকা জমা দিতে হবে।
ধাপ-১৭ঃ
এরপর উপরের সকল তথ্য ঠিক আছে কিনা আরেকবার পরীক্ষা করে নিতে হবে। সকল তথ্য ঠিক থাকলে ‘সাবমিট’ বাটনটিতে ক্লিক করে পরবর্তী পৃষ্ঠায় যেতে হবে।
ধাপ-১৮ঃ
সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে পরবর্তী পৃষ্ঠাতে আবেদন পত্রের নম্বর ও নির্দিষ্ট কার্যালয়ে যাওয়ার তারিখ দিয়ে দেওয়া হবে। এরপর নিচের ‘আবেদনপত্র প্রিন্ট’ বাটনে ক্লিক করে আবেদনপত্রটি প্রিন্ট করে নিতে হবে।
ধাপ-১৯ঃ
ওয়েবসাইটে উল্লেখ করা তারিখের আগেই আবেদনপত্রের প্রিন্ট কপিটি নিয়ে আবেদন শুরু করার সময় দেওয়া নিবন্ধকের কার্যালয়ে যেতে হবে। এসময় সাথে করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রগুলোও নিয়ে যেতে হবে। এরপর নিবন্ধকের কার্যালয়ের কর্তব্যরত ব্যক্তিদের নির্দেশনা অনুযায়ী কয়েকটি কাজ করলেই জন্ম নিবন্ধনের সঠিক কপিটি দিয়ে দেওয়া হবে।
জন্ম নিবন্ধন সনদ সংশোধনের খরচ
জন্ম নিবন্ধন সনদ সংশোধন করার জন্য আবেদকারী দেশের অভ্যন্তর থেকে আবেদন করলে তাকে ১০০ টাকা জমা দিতে হবে। এবং দেশের বাইরের দূতাবাস থেকে সংশোধনের কাজ করলে তাকে ২ মার্কিন ডলার জমা দিতে হবে।
অনলাইন থেকে জন্ম নিবন্ধন ডাউনলোড করার নিয়ম
জন্ম নিবন্ধন সনদের অনলাইন কপি ডাউনলোড করার মুল শর্ত হচ্ছে জন্ম নিবন্ধন সনদটি অনলাইনে থাকতে হবে। তাই সনদটির অনলাইন কপি ডাউনলোড করতে হলে প্রথমে উপরের ধাপগুলো পূরণ করে জন্ম নিবন্ধনটিকে অনলাইনে যাচাই করতে হবে। জন্ম নিবন্ধন সনদের তথ্যগুলো দেখানোর পর নিচের কাজগুলো করতে হবে।
ধাপ-১ঃ
প্রথমে কম্পিউটারের স্ক্রিনের ডানদিকে থাকা মেনু বাটনে ক্লিক করে প্রিন্ট অপশনটি সিলেক্ট করতে হবে।
ধাপ-২ঃ
এরপর নতুন একটি পৃষ্ঠা ওপেন হবে। কেউ চাইলে এখান থেকেই জন্ম নিবন্ধনের কপিটি সরাসরি প্রিন্ট করে নিতে পারবেন। প্রিন্ট করার জন্য পৃষ্ঠাটির যেকোনো একপাশে থাকা প্রিন্ট বাটনটিতে ক্লিক করতে হবে। জন্ম নিবন্ধন সনদ প্রিন্ট করার জন্য অবশ্যই কম্পিউটারটি একটি সচল প্রিন্টারের সাথে যুক্ত থাকতে হবে।
ধাপ-৩ঃ
জন্ম নিবন্ধনের অনলাইন কপি ডাউনলোড করার জন্য এরপর ডেসটিনেশন (Destination) অপশনটির পাশে থাকা তালিকা ওপেন করতে হবে।
ধাপ-৪ঃ
তালিকাটি ওপেন হওয়ার পর তালিকা থেকে Save as PDF অপশনটিতে ক্লিক করতে হবে।
ধাপ-৫ঃ
ক্লিক করার পর ‘সেভ’ বাটনটিতে ক্লিক করতে হবে। এরপরই জন্ম নিবন্ধন সনদের অনলাইন কপিটি ডাউনলোড শুরু হয়ে যাবে। এর PDF ফাইলের আকার অনেক ছোট হওয়ায় খুব দ্রুতই ডাউনলোড শেষ হয়ে যাবার কথা।
ধাপ-৬ঃ
ডাউনলোড শেষ হয়ে গেলে সহজেই কম্পিউটারের ‘ডাউনলোডস’ (Downloads) ফাইলটি থেকে জন্ম নিবন্ধন সনদটি খুঁজে বের করে ব্যবহার করতে পারবেন।
শেষকথা
বর্তমানের প্রযুক্তি নির্ভর বিশ্বে প্রায় সকল তথ্যই অনলাইন ডাটাবেসে সংরক্ষণ করা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের জন্ম নিবন্ধন সনদগুলোর সকল তথ্যই সরকার ডাটাবেসে সংরক্ষণ করে। কিন্তু অনেক কারণেই জন্ম নিবন্ধনের তথ্য ডাটাবেসে না থাকতে পারে। যাতে করে জন্ম নিবন্ধন থাকা ও না থাকা একই ব্যাপার হয়ে যায়। এই একই সমস্যা জন্ম নিবন্ধন সনদে ভুল থাকলেও হতে পারে। তাই যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় আবেদনের সময় জন্ম নিবন্ধন প্রয়োজন হলে আগে থেকেই জন্ম নিবন্ধন অনলাইনে আছে কিনা ও সেটি নির্ভুল কিনা তা জেনে নেওয়া উচিত সবারই। তাই জন্ম নিবন্ধন অনলাইনে যাচাই করা ও তাতে কোন ভুল থাকলে তা সংশোধন করার কাজে এই লেখাটি আপনাদের অনেকটা সাহায্য করবে বলে আশা করছি।
অনবরত জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী
১) জন্ম নিবন্ধন সনদ অফলাইনে করলে কি অনলাইনে তথ্য পাওয়া যাবে?
উত্তরঃ হ্যাঁ। বর্তমানে জন্ম নিবন্ধন সঠিকভাবে করলেই তার তথ্য অনলাইনে পাওয়া যাবে। সেটা অনলাইনে তৈরী করা হোক বা অফলাইনে।
২) জন্ম নিবন্ধন সনদ ডাউনলোড করে প্রিন্ট করিয়ে কি সেটা জন্ম নিবন্ধনের মত ব্যবহার করা যাবে?
উত্তরঃ জন্ম নিবন্ধনের প্রিন্ট কপি অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শুধুমাত্র তথ্যের জন্য ব্যবহার করা যাবে। কিন্তু কোথাও যদি জন্ম নিবন্ধনটির কপি দেখানোর প্রয়োজন হয় সেক্ষেত্রে জন্ম নিবন্ধনের মূল কপিটি ব্যবহার করাই ভালো।
৩) মূল জন্ম নিবন্ধনের কপিটি হাতের কাছে না থাকলেও কি জন্ম নিবন্ধন অনলাইনে করা যাবে?
উত্তরঃ জন্ম নিবন্ধন অনলাইনে চেক করার জন্য আসলে শুধুমাত্র ১৭ অঙ্কের জন্ম নিবন্ধন নং প্রয়োজন। তাই এই নাম্বারটি জানা থাকলে জন্ম নিবন্ধনটির আর তেমন কোন প্রয়োজন হবে না।
৪) জন্ম নিবন্ধন নং পাওয়া না গেলে বা জানা না থাকলে কিভাবে জন্ম নিবন্ধন অনলাইনে চেক করবো?
উত্তরঃ জন্ম নিবন্ধন নং না থাকলে কোন ভাবেই জন্ম নিবন্ধন অনলাইনে চেক করা যাবে না।