- নিজের চোখই হোক আর অন্যের চোখ, চোখ স্পর্শ করার আগে সাবান নিয়ে হাত ধুয়ে দিতে হবে। এতে চোখের ইনফেকশন হওয়ার ঝুঁকি কমে যায়।
- চোখে কোনো পোকামাকড় কিংবা বস্তুকণা ঢুকে পড়লে বারবার চোখে পলক কাটতে হবে। এতে বাহ্যিক বস্তুটি এমনিতেই চোখ থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
- চোখ যদি পোকামাকড় কিংবা অনাহুত বস্তুটিকে বের করে দিতে না পারে, তাহলে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজে কিংবা কারো সাহায্য নিয়ে একটি কাজ করা যেতে পারে।
- আক্রান্ত চোখের পাতাটির পাপড়ির প্রান্তটি ধরে উক্ত পাতাটিকে ওপরের দিকে ওঠাতে হবে।
- তারপর খোঁজাখুঁজির জন্য আলোর প্রয়োজন হবে। কাঙ্ক্ষিত সেই বস্তুটিকে দেখামাত্র পরিচ্ছন্ন রুমালের কোনা দিয়ে তা বের করে আনার চেষ্টা করতে হবে। এই কাজটি খুবই হালকা ও সতর্কভাবে করা বাঞ্ছনীয়।
- তবে চোখের মণি কিংবা চোখের সাদা অংশের ওপর গভীরভাবে গেথে কোনো কিছু আটকে থাকলে সে ক্ষেত্রে বস্তুটিকে বের করার চেষ্টা করবেন না।
- চোখের যন্ত্রণা সৃষ্টিকারী সেই বস্তুটিকে খুঁজে না পেলে চোখের ওপরের পাতাকে পাপড়ির প্রান্ত থেকে ধরে নিচের পাপড়ির ওপর উঠিয়ে ছেড়ে দিন।
- এতে কোনো কাজ না হলে রোগীকে হাসপাতালের ক্যাজুয়ালিটি বিভাগে পাঠিয়ে দিতে হবে। কাছাকাছি কোনো চক্ষু বিশেষজ্ঞ থাকলে তার কাছেও যেতে পারেন।
নাক দিয়ে রক্ত পড়ার কারণ ও এর চিকিৎসা সমূহঃ
কোনো প্রকার শারীরিক সমস্যা বা আঘাত লাগা ছাড়াই যদি কারো নাক দিয়ে রক্ত পড়ে তাহলে তিনি দুশ্চিতায় পড়ে যান। ভাবেন তার কোনো কঠিন রোগ হয়েছে কিনা। আবার অনেকেই এই ধরনের সমস্যাকে একেবারেই গুরুত্বের সাথে দেখেন না। কিন্তু আপনি কি জানেন নাক দিয়ে রক্ত পড়া সমস্যা আসলে নিজে কোনো রোগ নয় বরং এটি অন্য কোনো রোগের লক্ষণ?
কি কারণে নাক দিয়ে রক্ত পড়ে সে সম্পর্কে আমাদের সকলের সচেতন হতে হবে। তাহলে এই সমস্যা বিষয়ক নানান ভ্রান্ত ধারনা আমাদের মনে বাসা বাঁধবে না।
আসুন জেনে নেওয়া যাক নাক দিয়ে রক্ত পড়ার কারণ সমূহ।
- মারামারি, সড়ক দূর্ঘটনা, নাকের ভিতরে আঙ্গুল বা অন্য কিছু দিয়ে খোঁচানো, নাকের ভিতরে অপারেশন জনিত আঘাত ইত্যাদি কারণে নাক দিয়ে রক্ত পড়তে পারে।
- নাকের মাঝখানের হাড় অতিরিক্ত বাঁকা হলে এই সমস্যাটি দেখা দিতে পারে।
- নাকের মাঝখানের পর্দায় ছিদ্র হলে নাক দিয়ে রক্ত পড়তে পারে।
- বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা যেমনঃ উচ্চ রক্তচাপ, হার্ট ফেইলিউর, জন্ডিস, রক্তশূন্যতা ইত্যাদি কারণে নাক দিয়ে রক্ত পাড়তে পারে।
- রক্তনালির কিছু জন্মগত ত্রুটি থাকলেও নাক দিয়ে রক্ত পড়তে পারে।
- মহিলাদের মাসিকের সময় এবং গর্ভাবস্থায় এই সমস্যাটি দেখা দিতে পারে।
- অ্যাসপিরিন জাতীয় ঔষধ সেবনের কারণেও নাক দিয়ে রক্ত পড়তে পারে।
নাক দিয়ে রক্ত পড়া সমস্যা তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিকারের জন্য কিছু কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহন করা যেতে পারে।
- নাক দিয়ে রক্ত পড়া শুরু হলে নাকে চাপ দিয়ে সামনের দিকে ঝুকে বসে পড়তে হবে।
- বৃদ্ধাঙ্গুল ও প্রথম আঙ্গুল দিয়ে নাকের দুই ছিদ্র জোরে বন্ধ করতে হবে।
- মুখ দিয়ে শ্বাস নিতে হবে।
- এইভাবে ১০- ১৫ মিনিট ধরে রাখতে হবে। প্রয়োজন হলে আরো বেশি সময় চাপ দিয়ে ধরে রাখতে হবে।
- এই সময় কপালে ও নাকের চারপাশে বরফ লাগাতে পারেন।
- রোগীর অবস্থা খারাপ হলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি অনুসরন করেও নাক দিয়ে রক্ত পড়া সমস্যাটি প্রতিকারে করা সম্ভব।
পেঁয়াজঃ নাক দিয়ে রক্ত পড়া বন্ধে পেয়াজ খুব কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। এই সমস্যাটি প্রতিকারে একটি পেঁয়াজ মোটা করে স্লাইস করে নিন। এক টুকরো পেঁয়াজ নিয়ে নাকের নিচে চেপে দিয়ে এর গন্ধ নিন। রক্ত পড়া খুব দ্রুত বন্ধ হয়ে যাবে।
অ্যাপেল সাইডার ভিনেগারঃ এক টুকরো তুলোয় অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার লাগিয়ে নিয়ে নাকের নিচে দিয়ে এর গন্ধ নিন ও ১০ মিনিট রাখুন। এই পদ্ধতি অনুসরন করলে বেশ উপকার পাওয়া যাবে।
তুলসী পাতাঃ নাক দিয়ে রক্ত পড়া সমস্যা প্রতিরোধে তুলসী পাতা ধুয়ে সরাসরি চিবিয়ে খেতে পারেন। এর ফলে দেহ ঠান্ডা হবে এবং রক্ত প্রবাহ বন্ধ হবে।
নাক দিয়ে রক্ত পড়া সমস্যা প্রতিকারে কিছু সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
- নাক দিয়ে রক্ত পড়া সমস্যাকে কখনো অবহেলা করবেন না।
- নিজের রক্তের গ্রুপ জেনে রাখুন।
- রক্ত পড়াকালে শোবেন না।
- নাকে হাত দেওয়ার অভ্যাস এড়িয়ে চলুন।
- শুষ্ক মৌসুমে নাক যাতে অতিরিক্ত শুষ্ক না হয়, তার জন্য নাকের সামনের দিকে পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করা যেতে পারে।
তাই নাক থেকে রক্ত পড়া সমস্যা প্রতিকারে এর কারণ সমূহ সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। আসুন এই সমস্যায় ভীত সন্ত্রস্ত না হয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহনের পর চিকিৎসকের শরণাপন্ন হই।
পুড়ে যাওয়ার মাত্রা অনুযায়ী এ ভাগ করা হয়েছে। ফার্স্ট ডিগ্রি বা প্রথম বা স্বল্প মাত্রার পোড়া, সেকেন্ড ডিগ্রি বা দ্বিতীয় বা মধ্যম মাত্রার পোড়া, থার্ড ডিগ্রি বা তৃতীয় বা মারাত্মক মাত্রার পোড়া। চিকিৎসাও নির্ভর করে কোন মাত্রায় পুড়েছে তার ওপর।
প্রথম মাত্রার পোড়া
শুধু চামড়ার উপরিভাগ পুড়ে গেলে তাকে প্রাথমিক মাত্রার পোড়া বলা হয়, সাধারণভাবে যাকে সামান্য পোড়া বলে। চামড়া বা ত্বকে দুটি স্তর থাকে। এপিডার্মিস ও ডার্মিস। এ ক্ষেত্রে শুধু এপিডার্মিস ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আর লক্ষণ হিসেবে-
* চামড়া লাল হয়ে যায়
* আক্রান্ত স্থান ফুলে যায়
* আক্রান্ত স্থানে ব্যথা থাকে।
তবে মুখ, যৌনাঙ্গ, নিতম্ব, অস্থিসন্ধি বা জয়েন্টে সামান্য পুড়ে গেলেও তাকে প্রথম মাত্রার পোড়া হিসেবে বিবেচনা করা হয় না। এ ক্ষেত্রে বিশেষায়িত চিকিৎসা নিতে হবে। এ ছাড়া প্রথম মাত্রার অন্যান্য পোড়ার ক্ষেত্রে প্রাথমিক চিকিৎসা নিলেও চলবে।
দ্বিতীয় মাত্রার পোড়া
চামড়ার এপিডার্মিস ও ডার্মিস উভয় স্তর পুড়ে যায়। এ ক্ষেত্রে চামড়ায় বা ত্বকে-
* ফোসকা পড়ে
* লাল হয়ে যায়
* অতিরিক্ত ব্যথা অনুভূত হয়
* ফুলে যায়।
দ্বিতীয় মাত্রার পোড়া সাধারণভাবে যদি তিন ইঞ্চি পরিমাণের বেশি বিস্তৃত না হয়, তবে সামান্য পোড়া হিসেবে প্রাথমিক চিকিৎসা নিলেও হবে। পোড়া অংশ যদি অধিক বিস্তৃত এবং হাত-পা, যৌনাঙ্গ, নিতম্ব, গিরায় বিস্তৃত হয়, তবে তা গুরুতর পোড়া হিসেবে অতিদ্রুত বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসা করতে হবে।
তৃতীয় মাত্রার পোড়া
গুরুতর পোড়া। এ ক্ষেত্রে চামড়ার উভয় স্তর, চর্বি, মাংস এমনকি হাড়ও পুড়ে যায়। এ ক্ষেত্রে
* পোড়া অংশ কালো হয়ে যায় অথবা শুষ্ক ও সাদা বর্ণ ধারণ করে
* শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে কষ্ট হয়
* কার্বন মনোক্সাইড নামক বাতাসের বিষাক্ত পদার্থ ফুসফুসে ঢুকে পড়ে
গুরুতর পোড়া রোগীর ক্ষেত্রে কোনো ধরনের দেরি না করে হাসপাতালে নিতে হবে। সম্ভব হলে সরাসরি বার্ন ইউনিটে রোগী স্থানান্তর করতে হবে।
তবে পোড়ার ক্ষেত্রে কত ডিগ্রি পুড়ে গেল তার ওপর রোগীর অবস্থা নির্ভর নাও করতে পারে। জরুরি বিষয় হলো-
* রোগী কতক্ষণ ধরে পুড়েছে
* বাহ্যিকভাবে শরীরে পোড়ার বিস্তৃতি (ডাক্তাররা যা 'রুল অব নাইন' দিয়ে নিরূপণ করেন) কতখানি
* মাথা, গলা, ঘাড়, বুক, পেট, যৌনাঙ্গ পুড়েছে কি না এই বিষয়গুলো চিকিৎসার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ।
সাধারণ পুড়ে যাওয়ার প্রাথমিক চিকিৎসা
প্রাথমিক ও দ্বিতীয় মাত্রার পোড়া, সাধারণভাবে যার বিস্তৃতি তিন ইঞ্চির কম, সে ক্ষেত্রে প্রাথমিক চিকিৎসা সবচেয়ে বেশি কাজে লাগে। সরাসরি আগুনে পুড়ুক বা পেট্রল-এসিডের মতো রাসায়নিকে পুড়ুক প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে-
* সম্ভব হলে আক্রান্ত স্থান শীতল পানির প্রবহমান ধারার (যেমন ট্যাপের পানি) নিচে ১০-১৫ মিনিট ধরে রাখতে হবে। গা পুড়ে গেলে শাওয়ার বা গোসলের ঝরনার পানির নিচে দাঁড়াতে হবে।
* যদি সম্ভব না হয়, তবে আক্রান্ত স্থান বালতির পানিতে ডুবিয়ে রাখতে হবে। পুকুর, নদীর পানিতেও ডোবানো যাবে।
* সেটাও সম্ভব না হলে, আক্রান্ত স্থানে পর্যাপ্ত পানি (গরম বা ফ্রিজের ঠাণ্ডা পানি নয়, সাধারণ তাপমাত্রার) ঢালতে হবে।
* পোড়া অংশ জীবাণুমুক্ত গজ বা ব্যান্ডেজ (তুলা নয়) দিয়ে ঢেকে দিতে হবে, যাতে জীবাণুর সংক্রমণ না হয়।
* ব্যথানাশক সেবন করতে হবে। সাধারণ পোড়ায় প্যারাসিটামল বা আইবুপ্রফেন-জাতীয় ব্যথানাশক সেবন করা যেতে পারে।
* পোড়ার মাত্রা রোগীর পক্ষে সব সময় বোঝা সম্ভব নয়। তাই অল্প পুড়লেও একবার ডাক্তার দেখানো উচিত।
যা করা যাবে না
* পোড়া অংশ বরফের পানি, ফ্রিজের পানি বা বরফ দেওয়া যাবে না। গরম পানিও ঢালা যাবে না।
* ডিম, টুথপেস্ট, মাখন এবং ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোনো ধরনের মলম ব্যবহার করা যাবে না।
* তুলা দিয়ে ড্রেসিং করা বা পোড়া অংশ ঢেকে রাখা যাবে না। শুকনো গজ বা ব্যান্ডেজ ব্যবহার করতে হবে।
* ডাক্তার দেখানোর আগে পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করবেন না।
গুরুতর পুড়ে যাওয়ার চিকিৎসা
প্রাথমিক মাত্রার পোড়ার ক্ষেত্রে যে ধরনের সাধারণ চিকিৎসা দেওয়া যায়, এখানেও তা করা যাবে। তবে গুরুতর পোড়ার ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে রোগীকে যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে নেওয়াটা বেশি জরুরি। তাই প্রাথমিক চিকিৎসায় যেন অতিরিক্ত সময় ব্যয় না হয়।
গুরুতর পুড়ে যাওয়া রোগীর শরীর থেকে যতটা সম্ভব পরিধেয় কাপড় খুলতে হবে। তবে এটা যেন টানা-হ্যাঁচড়া করে না করা হয়। এতে আক্রান্ত স্থান আরো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
আবার এ ধরনের রোগীকে ঠাণ্ডা পানিতে ডুবানো উচিত নয়। কারণ শরীরের তাপমাত্রা হঠাৎ কমে গিয়ে বিপদ হতে পারে।
পোড়া রোগীর অনেকের মৃত্যু ঘটে ধোঁয়ার কারণে। ধোঁয়ার মাধ্যমে শ্বাসনালিতে কার্বন মনোক্সাইড প্রবেশ করে। তাই আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে ওই স্থান থেকে রোগীকে দূরে নিতে হবে। রোগীর শ্বাস-প্রশ্বাস সঠিক রাখার জন্য শার্টের কলার, টাই, বুকের কাপড় শিথিল করে দিতে হবে।
পোড়া রোগীর বিপদ চিহ্ন
* রোগী অজ্ঞান হওয়া/অতিরিক্ত পানিশূন্য হয়ে শকে চলে যাওয়া
* বাতাসের বিষাক্ত ধোঁয়া ফুসফুসে গিয়ে শ্বাসতন্ত্র সংক্রমিত হওয়া, শ্বাসনালি ফুলে যাওয়া ও শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া
* পোড়া অংশে জীবাণুর সংক্রমণের মাধ্যমে ইনফেকশনে বিস্তৃতিলাভ করা
* শরীরে পানি ও লবণের অসাম্যতা (ইলেকট্রোলাইট ইমব্যালেন্স) দেখা দেওয়া
* প্রস্রাব বন্ধ হয়ে যাওয়া
* শ্বাসনালি পুড়ে যাওয়া
* খিঁচুনি হওয়া
* জমাট বাঁধা রক্ত দিয়ে রক্তনালি বন্ধ হয়ে যাওয়া ইত্যাদি।
মনে রাখুন
* শরীরে আগুন লেগে গেলে ওই স্থান থেকে যত দ্রুত সম্ভব সরে যান, বিশেষ করে গাড়ির ভেতর থেকে দ্রুত বের হতে হবে। আগুনের ধোঁয়া থেকে দূরে যান।
* দৌড়াবেন না। এতে আগুন আরো বেশি ছড়িয়ে পড়ে।
* শুয়ে পড়ে বারবার মাটিতে গড়াগড়ি দিন। এতে জামা-কাপড়ের আগুন নিভে যাবে এবং আগুনের বিস্তৃতি লাভের ঝুঁকি কমবে। এ সময় দুই হাত দিয়ে মুখ, গলা ঢেকে রাখা উচিত।
* মাথা ঠাণ্ডা রাখতে হবে, ভয় পাওয়া যাবে না। ভীত হলে মানুষ স্বাভাবিক কাজ করতে পারে না।
* হঠাৎ সিদ্ধান্তে উঁচু স্থান থেকে লাফিয়ে না পরে পরিস্থিতি বিবেচনা করুন। আতঙ্কে উঁচু স্থান থেকে লাফিয়ে পড়ে হাত পা ভাঙার মতো বিপদ যেমন ঘটে, তেমনি মৃত্যুও ঘটতে পারে।
* বাড়িতে আগুন লাগার উপকরণ গ্যাসের চুলা, ম্যাচ বক্স, ইলেকট্রিক সুইচ সাবধানে ব্যবহার করতে হবে। কর্মক্ষেত্রে ও বাড়িতে আগুন নেভানোর উপকরণ রাখা উচিত।
* আগুন লাগলে কী করা উচিত সে বিষয়ে বাড়ির শিশু-বৃদ্ধ সবাইকে প্রাথমিক ধারণা দিন।
* চারদিকে আগুন থাকলে মাথা নিচু করে নাক চেপে দ্রুত স্থান ত্যাগ করুন।
* আগুনের ওপর ভেজা কম্বল বা কাপড় বা বালু চাপা দিন।
পরবর্তী চিকিৎসা
পোড়ার চিকিৎসা বিশেষায়িত হাসপাতালে করা উচিত। সেখানে ক্ষতস্থান সেরে ওঠার চিকিৎসা করা হয়। পরবর্তী সময়ে সৌন্দর্য ও কর্মক্ষমতা ফিরিয়ে আনার জন্য আরো কিছু চিকিৎসারও প্রয়োজন হতে পারে। এ ধরনের চিকিৎসার মধ্যে আছে-স্কিন গ্রাফট, মাইক্রোসার্জারি ইত্যাদি।
ঘরে বা বাইরে কাজ করতে গিয়ে প্রায়ই হাত- পা কাটছে। আবার রান্না করতে গিয়ে ধারালো ছুরি বা বটিতে হাত কেটে যায় অনেক সময়। একটু আধটু কাটাছেড়া নিত্যদিনের সঙ্গী যেন। তবে সঠিকভাবে এর যত্ন না নিলে বেশ অনেকদিন লাগে সেরে যেতে। আবার ছোটখাট কাটাছেড়া থেকে ইনফেকশন হয়ে যেতে পারে। ভালোভাবে কাটা স্থান পরিষ্কার না করলে কিংবা ব্যান্ডেজ না করা হলে আবারো ময়লা গিয়ে ব্যথা বাড়িয়ে দিতে পারে।
তাই যেভাবেই ক্ষত তৈরি হোক না কেন, শরীরের কোথাও কেটে যাওয়ার পর প্রাথমিকভাবে করণীয় হলো- রক্তপাত বন্ধ করা এবং সংক্রমণ যাতে না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখা। তাই শরীরের কোথাও কেটে যাওয়ার পর তাৎক্ষণিক যে কাজগুলো করবেন-
> একটা পরিষ্কার কাপড় বা গজ দিয়ে কাটা স্থানটি চেপে ধরে রাখুন। কাপড় বা গজ না পেলে হাতের তালু কিংবা দুই আঙুল ব্যবহার করে চিমটির মতো ধরে রাখতে পারেন। টানা ২০-৩০ মিনিট চাপ দিয়ে ধরে রাখলে রক্ত জমাট বেঁধে রক্তপাত বন্ধ হয়ে যাবে।
> রক্ত পড়া বন্ধ হয়ে গেলে পানিতে ভালো করে ধুয়ে নিন। কাটা স্থান জীবাণুমুক্ত এবং পরিষ্কার করতে আয়োডিন ও আয়োডিনজাত অ্যান্টিসেপটিক কিংবা ক্লিনজারও ব্যবহার করা যায়।
> কাটা স্থান পরিষ্কার করার পর ওই জায়গায় পাতলা স্তরে অ্যান্টিবায়োটিক মলম দিয়ে ঢেকে দিন। মিউপিরোসিন, নিওমাইসিন বা এ জাতীয় মলম সব সময় বাড়িতে প্রাথমিক চিকিৎসার ওষুধ হিসেবে রাখা উচিত।
> হাতের কাছে মলম না থাকলে হলুদের গুঁড়া কিংবা লবণ পানিও ব্যবহার করা যায়। সবশেষে একটি পাতলা গজ বা ব্যান্ডেজ দিয়ে সম্পূর্ণ স্থানটি হালকাভাবে আটকে দিন।
> ব্যবহৃত ব্যান্ডেজটি সাধারণ গজ ব্যান্ডেজ বা স্টিকারযুক্ত ব্যান্ডেজ যা-ই হোক না কেন, প্রতিদিন অন্তত একবার তা পরিবর্তন করতে হবে।
রক্ত পড়া বন্ধ হয়ে গেলে টিউবওয়েল বা ট্যাপের বহমান পানিতে ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। কাটা স্থান জীবাণুমুক্ত এবং পরিষ্কার করার জন্য সাবান বা আয়োডিন ও আয়োডিনজাত অ্যান্টিসেপটিক কিংবা ক্লিনজারও ব্যবহার করা যায়।
> কাটা স্থান পরিষ্কার করার পর ওই জায়গায় পাতলা স্তরে অ্যান্টিবায়োটিক মলম দিয়ে ঢেকে দিন। মিউপিরোসিন, নিওমাইসিন বা এ জাতীয় মলম সব সময় বাড়িতে প্রাথমিক চিকিৎসার ওষুধ হিসেবে রাখা উচিত।
> এগুলো হাতের কাছে না পেলে হলুদের গুঁড়া কিংবা লবণ পানিও ব্যবহার করা যায়। সবশেষে একটি পাতলা গজ বা ব্যান্ডেজ দিয়ে সম্পূর্ণ স্থানটি হালকাভাবে আটকে দিতে হবে।
> ব্যবহৃত ব্যান্ডেজটি সাধারণ গজ ব্যান্ডেজ বা স্টিকারযুক্ত ব্যান্ডেজ যা-ই হোক না কেন, প্রতিদিন অন্তত একবার তা পরিবর্তন করতে হবে। যদি কাটা জায়গাটা ফুলে যায় কিংবা লাল দেখায়, ব্যথা বেড়ে যায় কিংবা ব্যান্ডেজ ভিজে যেতে থাকে অথবা জ্বর চলে আসে, তাহলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। এগুলো কাটা জায়গায় সংক্রমণ সংঘটনের লক্ষণ।
> খেয়াল রাখবেন, কেটে-ছিঁড়ে গেলে রক্তপাত হওয়াটা স্বাভাবিক। তবে ফিনকি দিয়ে রক্ত ছুটলে বুঝতে হবে যে, রক্তনালি কেটে গেছে। যা সহজে বন্ধ না-ও হতে পারে।
> আবার রক্ত জমাট বাঁধার প্রক্রিয়ায় কোনো সমস্যা থাকলে, যেমন- যকৃতের রোগ, হিমোফিলিয়া, ডেঙ্গু কিংবা দীর্ঘদিন ধরে অ্যাসপিরিন সেবন করছেন, এমন রোগীর রক্তপাত সহজে বন্ধ না-ও হতে পারে।
> অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে নাড়ির স্পন্দন কমে আসতে পারে। সেইসঙ্গে রক্তচাপ কমে যেতে পারে এবং হাত-পা ঠাণ্ডা হয়ে আসতে পারে। এর অর্থ হলো- রোগীর জীবন বিপন্ন হয়ে আসছে। আবার কোনো রোগী কাটা-ছেঁড়ার পর হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে পড়তে পারেন। আধা ঘণ্টা চেপে রাখার পরও যদি রক্তপাত বন্ধ না হয়, তাহলে ওই স্থানে সেলাই লাগতে পারে।
> লোহা বা এ জাতীয় কোনো বস্তু ঢুকে রক্তপাত হলে এবং ক্ষতস্থানে ওই বস্তু থেকে গেলে ক্ষতস্থানের দুই পাশ চেপে ধরতে হবে। কোনোভাবেই ক্ষতস্থানের ওপর চাপ দেয়া যাবে না। এমনকি ক্ষতস্থান থেকে বস্তুটি তুলে ফেলারও চেষ্টা করবেন না। ক্ষতস্থান ও বস্তুটির ওপর আলতো করে গজ বা পরিষ্কার কাপড় দিয়ে মুড়িয়ে দিন। এরকম আহত ব্যক্তিকে যত দ্রুত সম্ভব নিকটস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে।
> রক্তপাট বন্ধ না হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
দাত হলুদ ভাব তুলে ফেলার উপায় জেনে নিন
সঠিক খাবার
কুড়মুড়ে ফল ও সবজি খাদ্যতালিকায় রাখুন, যেমন: আপেল ও গাজর। এগুলো তীক্ষ্ণ এবং খাওয়ার সময় দাঁতে ঘষা লাগে। কিন্তু তা এনামেলের ক্ষতি করে না। দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার খান। এতে পিএইচের (পোটেনশিয়াল অব হাইড্রোজেন) মাত্রা বাড়বে। ফলে দাঁত হবে উজ্জ্বল।
ফলের খোসা
কলা বা কমলালেবুর খোসা দিয়ে দাঁত ঘষুন, এতে হলদেভাব কমবে। এগুলো ম্যাগনেশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ ও পটাশিয়াম সমৃদ্ধ, যা দাঁতের এনামেল বৃদ্ধিতে সহায়ক। ফলের খোসা দিয়ে ঘষার কয়েক মিনিট পর দাঁত ব্রাশ করে নিন। সপ্তাহে দুবার করুন, ফল মিলবে।
তেল
নারকেল তেলে রয়েছে লাউরিক অ্যাসিড, যা দাঁত থেকে ব্যাকটেরিয়া দূর করে এবং হলদেভাব থেকে দূরে রাখে। এক টেবিলচামচ খাঁটি নারকেল তেল মুখে নিয়ে ১৫-২০ মিনিট রাখুন। এতে মুখের চারপাশে এটি প্রবেশ করবে। পরে ফেলে দিন। ভালো করে কুলকুচি করে দুই গ্লাস পানি পান করুন।
স্ট্রবেরি
স্ট্রবেরিতে রয়েছে ম্যালিক অ্যাসিড ও ভিটামিন সি, যা দাঁতকে সাদা করতে সাহায্য করে। আর ভিটামিন সি প্লাক দূর করতে সাহায্য করে। কিছু বেরি পিষে নিন এবং এই মিশ্রণ দিয়ে ব্রাশ করুন। সপ্তাহে এক-দুবার করুন। আপনি স্ট্রবেরি খেতেও পারেন। ভালো উপকার পাবেন।
সাধারণ লবণ
দাঁতের হারানো মিনারেল ফিরিয়ে আনে লবণ। দাঁত উজ্জ্বল করতে সহায়তা করে লবণ। টুথপেস্টের পরিবর্তে প্রতিদিন টুথ পাউডারের মতো করে আপনি লবণ ব্যবহার করতে পারেন। আপনি লবণের সঙ্গে বেকিং সোডা মিশিয়ে তা ব্যবহার করতে পারেন। কিন্তু মাড়ির যেন ক্ষতি না হয়, সেদিকে অবশ্যই লক্ষ রাখতে হবে।
মুখে ঘা প্রতিরোধ এর উপায়। জেনে নিন
মধু
মুখের ঘা প্রতিরোধে মধু খুবই কার্যকর। এতে রয়েছে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান। মধু ক্ষতস্থান এলাকা আর্দ্র রাখে। মধুর সঙ্গে একটু হলুদ মিশিয়ে লাগালে দ্রুত উপশম হয়। ভালো ফলের জন্য দিনে তিন-চার বার মধু লাগাতে পারেন।
নারকেল তেল
নারকেল তেলে রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি, অ্যান্টি-ফাঙ্গাল ও অ্যান্টি-ভাইরাল উপাদান, যা মুখের ঘা প্রতিরোধে সহায়ক। ক্ষতস্থানে নারকেল তেল লাগান এবং এটি দ্রুত ব্যথানাশে সহায়ক করে।
অ্যালোভেরা জেল
মুখে ঘা হলে অ্যালোভেরা জেল লাগালে সহজে ব্যথানাশ করবে। ক্ষতস্থানে অ্যালোভেরা জেল লাগান।
তুলসীপাতা
মুখের ঘা প্রতিরোধে কার্যকর তুলসীপাতা। এতে রয়েছে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান, যা ক্ষত সারতে দারুণ কার্যকর। তুলসীপাতা চিবিয়ে খেতে পারেন এবং সেইসঙ্গে দিনে দুবার উষ্ণ পানি দিয়ে কুলকুচি করতে পারেন।
লবণ-পানি
মুখের ঘা প্রতিরোধে কার্যকর লবণ। এটি ব্যাকটেরিয়া নির্মূল করে। মাউথওয়াশ হিসেবেও কাজ করে লবণ এবং ব্যাকটেরিয়া ও মুখের দুর্গন্ধ দূর করে। ভালো ফলের জন্য দিনে দুবার লবণ লাগাতে পারেন ক্ষতস্থানে।
রসুন
মুখের ঘা রোধে খুবই উপকারী রসুন। এতে থাকা অ্যালিসিন নামক উপাদান ঘায়ের ব্যথা দূর করে এবং ক্ষতস্থান কমিয়ে আনে। ভালো ফলের জন্য রসুনের কোয়া ক্ষতস্থানে ঘষুন।
ফ্রেকচারের কারণ এবং করনীয়
ফ্রেকচারের কারণ:
১. সরাসরি আঘাত
কোনো স্থানে আঘাতের কারণে হাড় ভেঙে যায়। যেমন : হাড়ের ওপর সরাসরি আঘাত, বুলেট ইনজুরি ইত্যাদি।
২. পরোক্ষ আঘাত
আঘাতের স্থান থেকে দূরে হাড় ভেঙে যায়। যেমন : বাইরের দিকে হাড় ছড়িয়ে পড়ে গেলে কলার বোন ভেঙে যেতে পারে।
৩. শক্তিশালী মাংসপেশির ক্রিয়ার আঘাত
একদল মাংসপেশির মারাত্মক সংকোচনে হাড় ভেঙে যায়। যেমন : প্রচণ্ড কাশির কারণে পাঁজরের হাড় ভেঙে যেতে পারে।
ফ্র্যাকচার ওপেন বা ক্লোজড হতে পারে। ওপেন ফ্র্যাকচারের ক্ষেত্রে শুধু হাড়ই নয়, ত্বকের ক্ষতিটাও অনেক বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। কারণ, যেহেতু ওপেন ফ্র্যাকচারে হাড় ত্বক ভেদ করে বাইরে বেরিয়ে আসে, তাই ব্যাকটেরিয়া ক্ষতে প্রবেশ করতে পারে এবং পুঁজ তৈরি করতে পারে। এটির কারণে টিটেনাস ও গ্যাস গ্যাংগ্রিনও হতে পারে।
ক্লোজড ফ্র্যাকচারের ক্ষেত্রে ত্বক অক্ষত থাকে। যেহেতু হাড় ভাঙে ত্বকের অভ্যন্তরে, তাই সেখানে রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া প্রবেশ করতে পারে না।
বিভিন্ন ধরনের ফ্র্যাকচার
১. গ্রিনস্টিক ফ্র্যাকচার
যখন কেবল একদিকের পেরিওস্টিয়াম ভেঙে যায়, তাকে গ্রিনস্টিক ফ্র্যাকচার বলে। এটি সাধারণত শিশুদের ক্ষেত্রে হয়।
২. কমপাউন্ড ফ্র্যাকচার
যখন ভাঙা হাড় বাইরের বাতাসের সংস্পর্শে আসে এবং বেরিয়ে থাকা হাড় ও ক্ষতে ময়লা, ধুলো ও ব্যাকটেরিয়া প্রবেশ করে, সেটিকে কমপাউন্ড ফ্র্যাকচার বলে।
৩. সিম্পল ফ্র্যাকচার (ক্লোজড)
ভেঙে যাওয়া হাড়ের প্রান্ত ত্বক ফুঁড়ে বেরিয়ে আসে না। তবে উভয় পেরিওস্টিয়াম অন্তর্ভুক্ত হয়।
৪. কমপ্লিকেটেড ফ্র্যাকচার
হাড় ভাঙার সঙ্গে কিছু গুরুত্বপূর্ণ অভ্যন্তরীণ অঙ্গে ইনজুরি হয়। যেমন : মস্তিষ্ক, স্পাইনাল কর্ড, ফুসফুস ইত্যাদি।
সাধারণ উপসর্গ
* ফ্যাকচারের স্থান কিংবা আশপাশের এলাকায় ব্যথা হওয়া।
* আক্রান্ত স্থানে চাপ দিলে ব্যথা বা অস্বস্তি অনুভব করা।
* ফ্যাকচারের স্থান ফুটে ওঠা।
* অঙ্গবিকৃতি হওয়া এবং হাড়ের নিচের অংশ বা কোনো অংশ স্বাভাবিকভাবে নাড়াচাড়া করতে না পারা।
* হাড়ের ঘর্ষণে খরখরে শব্দ হওয়া।
হাত বা পায়ের যে অংশে ফ্যাকচার হয়েছে, সেটি সুস্থ পাশের সঙ্গে তুলনা করে পরীক্ষা করতে হবে। তাহলে এটি রোগ নির্ণয়ে সহায়ক হবে।
কী করবেন
* শরীরের আঘাতপ্রাপ্ত স্থানটি স্থির রাখতে হবে, সেখানে সাপোর্ট দিয়ে রাখতে হবে, যাতে নাড়াচাড়া করতে না পারে। এতে স্থানটি আবার আঘাত পাওয়া থেকে রক্ষা পাবে। শুধু তাই নয়, এতে হাড়ের ভাঙা প্রান্ত রক্তনালি, নার্ভ বা মাংসপেশিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারবে না।
* ব্যান্ডেজের মাধ্যমে
*স্প্রিন্টের মাধ্যমে
★স্বাভাবিক ক্ষেত্রে সাধারণ ব্যান্ডেজই যথেষ্ট। কিন্তু অঙ্গ বিকৃতি ঘটলে বা দুর্ঘটনা ঘটলে রোগীকে হাসপাতালে পাঠানোর জন্য, বিশেষ করে রোগীর হাতে ও পায়ে স্প্রিন্ট বেঁধে দিতে হবে, যাতে স্থানটি নড়াচড়া থেকে বিরত থাকে।
★কখনোই ফ্র্যাকচারের ঠিক ওপরের স্থানে ব্যান্ডেজ বাঁধবেন না।
★ব্যান্ডেজ এমনভাবে বাঁধবেন, যাতে রোগী স্থানটি নাড়াতে না পারেন এবং সেখানে আবার আঘাত না লাগে। এটি টাইটও করবেন না। এতে রক্ত সঞ্চালন ব্যাহত হয়।
★স্প্রিন্ট এমন লম্বা হতে হবে, যাতে জয়েন্টের ওপরের ও ফ্র্যাকচারের নিচের অংশকে নিশ্চল রাখতে পারে।
★স্প্রিন্ট ভালো প্যাডযুক্ত হতে হবে, যাতে হাত বা পায়ের সঙ্গে ঠিকমতো ফিট হয়। এটি পর্যাপ্ত চওড়া হবে। জরুরি ক্ষেত্রে স্প্রিন্ট হিসেবে হাঁটার জন্য ব্যবহৃত লাঠি, কাঠের টুকরো কিংবা হার্ডবোর্ডের টুকরো ব্যবহার করা যেতে পারে।
★বেশি ব্যথা হলে ব্যথানাশক ইনজেকশন প্রয়োগ করা যেতে পারে।
১. ব্যাক এক্সটেনশন এক্সারসাইজ
ফ্লোরে পেটের উপর শুয়ে মুখ নীচের দিকে রেখে হাত সাইডে কোমরের পাশে রাখুন। আপনার মাথা ও বুক উঁচু করার চেষ্টা করুন। খুব প্রেসার নিয়ে করবেন না। এভাবে ১০-১৫ সেকেন্ড থাকুন। তারপর মাথা ও কাঁধ নামিয়ে ফেলুন। দিনে ২০-২৫ বার করে করুন।
২. লেগ এন্ড আর্ম এক্সারসাইজ
পেটের উপর শুয়ে থাকুন বা উঁচু করে রাখুন। মাথা উঁচু করুন। একহাত মেঝে থেকে উপরে রাখুন। সাথে সাথে বিপরীত পাশের পাও উপরে তুলুন। এভাবে ৫-৬ সেকেন্ড রাখুন। তারপর নামিয়ে ফেলুন। এভাবে ১০-১৫ বার করুন।
৩. ব্রিজ এক্সারসাইজ
পিঠের উপর শুয়ে থাকুন। হাঁটু ৯০ ডিগ্রি কোণে বাঁকিয়ে ধরুন এমন ভাবে যাতে পায়ের পাতা নীচে মেঝেতে লেগে থাকে। নিতম্ব উঁচু করে ধরুন যাতে পিঠ সোজা লাইনে থাকে। এই অবস্থায় ১০-১৫ সেকেন্ড থাকুন এবং ধীরে ধীরে আবার শরীর মেঝেতে রাখুন এভাবে ২০-৩০ বার করুন।
৪. লোয়ার ব্যাক এক্সটেনশন এক্সারসাইজ
এই এক্সারসাইজ খুবই সহজ, আপনার শুধু দরকার পরিষ্কার মেঝে। আপনি টিভি দেখে দেখেও এটি করতে পারেন। মেঝেতে ফ্ল্যাট হয়ে শুয়ে (পেটের উপর) মাথার পেছনে হাত দিয়ে ধীরে ধীরে বুক সহ মাথা উঁচু করার চেষ্টা করুন। মুখ নীচের দিকে থাকবে। এভাবে ১০ মিনিট করে দিনে ৩ বার করুন।
৫. ক্যাট এন্ড ক্যামেল এক্সারসাইজ
হাত ও হাঁটুর উপর ভর দিয়ে বসুন। নিঃশ্বাস নেয়ার সময় পিঠ উটের পিঠের মত বাঁকিয়ে নিন (বাঁকানো অংশ উপরের দিকে মুখ করে থাকবে) ও মাথা উঁচু করে ধরুন। এভাবে ৫ সেকেন্ড থাকুন। নিঃশ্বাস ছাড়ার সময় পিঠ “U” এর মত আকৃতি অর্থাৎ বিড়ালের পিঠ টান দেয়ার মত করে মাথা ও বুক নীচে নামান। এভাবে পাঁচ সেকেন্ড থাকুন। দিনে ১০-১৫ বার এই এক্সারসাইজ করুন।
ঘাড় ও পিঠের চর্বি কমাতে ডায়েট প্ল্যান
ফ্যাট খাবারের বদলে প্রচুর পরিমাণে শাক সবজি খান। কেটে বা জুস করে দুই ভাবেই খেতে পারেন। কেটে খেলে বেশি ভালো। পাশাপাশি আপনি প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খাবেন। ফ্যাট শরীরের জন্যে দরকারও বটে। তাই স্বাস্থ্যকর ফ্যাট খান। ওমেগা ৩ এর মত ফ্যাট খান। ভেজিটেবল তেল খেলে ভালো। ফ্রেশ মাছ ও মাংস খাওয়ার চেষ্টা করুন। ব্যাকন, সসেজ বা লাঞ্চ মিটের বদলে ফ্রেশ মাংস খান অর্থাৎ প্রক্রিয়াজাত মাংস খাওয়া বন্ধ করতে হবে। কারণ তাতে ফুড এডিডিটিভ ও স্যাচুরেটেড ফ্যাটই বেশি থাকে। যখনই সম্ভব হরমোন ফ্রি মাংস খান। সাদা ময়দা, সাদা চালের গুঁড়া বা ইনস্ট্যান্ট যবের গুঁড়ার বদলে বাদামি চাল, হাতে গুঁড়া করা যব বা আটা খান। ফাইবার (আঁশ জাতীয়) সমৃদ্ধ খাবার খান।
এই তো বেশ জেনে গেলেন ঘাড় ও পিঠের মেদ কমানোর ব্যায়ামের পাশাপাশি ডায়েট প্লানটাও। এক্সসারসাইজগুলো নিয়মিত করুন, সুস্থ থাকুন।
লক্ষণসমূহঃ
* মুখ মন্ডল ফ্যাকাশে হয়ে যায়;
* নাড়ি দুর্বল ও মন্থর হতে পারে;
* শ্বাস-প্রশ্বাস ধীর গতিতে চলতে পারে;
প্রাথমিক চিকিৎসাঃ
* রোগীকে ছায়াতে ও মুক্ত বাতাসে রাখতে হবে। যাতে পর্যাপ্ত মুক্ত বাতাস রোগীর গায়ে লাগে তার ব্যবস্থা করতে হবে;