ড্রাগন ফলের পরিচিতি ও উৎপত্তিস্থল
ড্রাগন ফল মূলত আমেরিকা মহাদেশের একটি জনপ্রিয় ফল। অন্যান্য ক্যাকটাস জাতীয় ফসলের মতো ড্রাগন ফলের উৎপত্তি মরু অঞ্চলে নয়, বরং এটি পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত সমৃদ্ধ মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকার ফল। তাই স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য গড় ২০ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা এবং বাৎসরিক ৫০০ থেকে ১০০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত প্রয়োজন । তবে অতিরিক্ত বৃষ্টির জন্য ফুল ঝরা, ফলের পচন ও গাছের গোড়া পচা দেখা যেতে পারে। তাই জমিতে পানি নিষ্কাশন সুনিশ্চিত করতে হবে ।
বর্তমানে দেশে বাণিজ্যিকভাবে এ ফলের চাষ শুরু হয়েছে। বাংলাদেশে সর্বপ্রথম ২০০৭ সালে থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা ও ভিয়েতনাম থেকে এই ফলের বেশ কয়েকটি জাত আনা হয়।
ড্রাগন ফলের গাছ ক্যাকটাস প্রজাতির। এই গাছের কোনো পাতা নেই। ড্রাগন ফলের গাছ সাধারণত ১.৫ থেকে ২.৫ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) ড্রগন ফলের একটি জাত উদ্ভাবন করেছে। নতুন জাতটির নাম বারি ড্রাগন ফল-১। বাংলাদেশের আবহাওয়ার জন্য উপযুক্ত করে তৈরি করা হয়েছে জাতটি।
ড্রাগন ফল দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াতে জনপ্রিয় ফল। এ ফলের আকার বড়, পাকলে খোসার রং লাল হয়ে যায়, শাঁস গাঢ় গোলাপী রঙের, লাল ও সাদা এবং রসালো প্রকৃতির। ফলের বীজগুলো ছোট ছোট কালো ও নরম। একটি ফলের ওজন ১৫০ গ্রাম থেকে ৬০০ গ্রাম পর্যন্ত হয়ে থাকে।
ড্রাগন ফলের জাত
ড্রাগন ফল সাধারণত তিন প্রজাতির হয়ে থাকে-
১) লাল ড্রাগন ফল বা পিটাইয়া। এর খোসার রঙ লাল ও শাঁস সাদা। এই প্রজাতির ফলই বেশি দেখতে পাওয়া যায়।
২) কোস্টারিকা ড্রাগন ফল। খোসা ও শাঁস উভয়ের রঙই লাল।
৩) হলুদ রঙের ড্রাগন ফল। এই জাতের ড্রাগন ফলের খোসা হলুদ রঙের ও শাঁসের রঙ সাদা।
বাংলাদেশে উদ্ভাবিত জাত
বারি ড্রাগন ফল-১, বাউ ড্রাগন ফল-১ (সাদা) ,বাউ ড্রাগন ফল-২ ( লাল ), বাউ ড্রাগন ফল-৩
ড্রাগন ফলের পুষ্টিগুণ
ভিটামিন সি, মিনারেল এবং উচ্চ ফাইবারযুক্ত।ফলে ফিবার, ফ্যাট, ক্যারোটিণ, প্রচুর ফসফরাস, এসকরবিক এসিড, প্রোটিন ,ক্যালসিয়াম, আয়রন রয়েছে।
প্রতি ১০০ গ্রাম ভক্ষণযোগ্য ড্রাগন ফলে যে পুস্টিমান পাওয়া যায় তা দেওয়া হলো-
পানি- ৮০-৯০ গ্রাম
শর্করা- ৯-১০ গ্রাম
প্রোটিন- ০.১৫-০.৫ গ্রাম
আঁশ- ০.৩৩-০.৯০ গ্রাম
খাদ্যশক্তি- ৩৫-৫০ কিলোক্যালরি
চর্বি- ০.১০-০.৬ গ্রাম
ক্যালসিয়াম- ৬-১০ মি গ্রাম
আয়রন- ০.৩-০.৭ মি.গ্রাম
ফসফরাস- ১৬-৩৫ গ্রাম
ক্যারোটিন- (Vitamin A থায়ামিন, রিবোফ্লাবিন সামান্য
ভিটামিন- বি-৩ – ০.২ – ০.৪ মি গ্রাম
ড্রাগন ফলের গুরুত্ব
১. ক্যারোটিন সমৃদ্ধ হওয়ায় চোখ ভালো রাখে।
২. আঁশের পরিমাণ বেশি থাকায় হজমে সহায়তা করে। এছাড়া আঁশ শরীরের চর্বি কমায়।
৩. এই ফলে বিদ্যমান প্রোটিন শরীরের যাবতীয় বিপাকীয় কাজে সহায়তা করে।
৪. এর ক্যালসিয়াম হাড় শক্ত ও দাঁত মজবুত রাখে।
৫. ভিটামিন বি-৩ রক্তের কোলেস্টেরল কমায় এবং ত্বক মসৃণ রাখে।
৬. ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং ত্বক , দাঁত ও চুল ভালো রাখতে সাহায্য করে।
ওজন কমানো
ড্রাগন ফল খাওয়ার ফলে শরীরের মেদ কম হয়। ড্রাগন ফলে প্রচুর মাত্রায় প্রোটিন থাকে, যেই কারণে শরীরের ওজন বাড়েনা। সুস্থ থাকতে চাইলে সালাদে ড্রাগন ফল খাওয়া ভুলবেন না।
হাঁপানি রোগে ড্রাগন ফল
হাঁপানি, সর্দি কাশি এবং স্নায়ু জরীত রোগ আমাদের জীবনে মারাত্মক আঘাত আনতে পারে এবং আমদের প্রতিদিনের ক্রিয়াকলাপকে প্রভাবিত করতে পারে। এই রোগ ফেলে রাখা উচিত নয়, এবং এই রোগের চিকিৎসা সময় মতন করা উচিত। ড্রাগন ফলে প্রচুর পরিমানে ভিটামিনের উপস্থিতি থাকে, যেই কারণে, এই ফল হাঁপানি রোগ সারাতে লাভদায়ক।
ক্যান্সার প্রতিরোধ
ড্রাগন ফলে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস আর ভিটামিন বি ২ পাওয়া যায়। এই ফলে এমন উপাদান থাকে যা শরীরের বিষাক্ত (Toxins) পদার্থগুলো অপসারণে সহায়তা করে।
চুলের জন্য ড্রাগন ফল
চুল ঝরে পড়া কমায়। এতে এমন অনেক পুষ্টি উপাদান রয়েছে, যা আমাদের চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে সাথে সাথেই চুলের ডগা মজবুত বানাতে সাহায্য করে।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে
কোষ্ঠকাঠিন্যতে মল খুব শক্ত হয় যায়। ড্রাগন ফলে পানি ও ফাইবারের মাত্রা প্রচুর হওয়ায় এই ফল ব্যক্তিকে হাইড্রেটেড রাখতে সহায়তা করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। এছাড়াও শরীরের বিপাকিয় ব্যবস্থা এবং হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি
ত্বক যত্নের অনেক প্রক্রিয়া চারিদিকে ছরিয়ে আছে, তবে সেইগুলো কতোটা লাভদায়ক তা বলা মুশকিল। তবে ড্রাগন এমন একটি ফল যেটিতে উচ্চ মাত্রায় ভিটামিন পাওয়া যায়, যা ত্বকের ব্রণ দূর করতে সহায়তা করে।
ডায়াবেটিস
সুগার অথবা ডায়াবেটিস একটি মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যা। ডায়াবেটিস অবশ্যই নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। এই রোগে রক্তে সুগারের পরিমাণ যতো কম রাখা যায় রোগীর জন্য ততোই ভালো। ড্রাগন ফলে অনেক ধরনের ভিটামিন ও খনিজ থাকে যা রক্তে সুগারের স্তর নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে এবং শরীরে ইনসুলিন বানাতে সহায়তা করে। ড্রাগন ফলকে প্রতিদিনের আহারে রাখার চেষ্টা করুন।
হজম শক্তি বৃদ্ধি
প্রতিদিনের জীবনে সুস্থ থাকতে হলে হজম প্রক্রিয়া ঠিক রাখা খুব দরকার। হজম প্রক্রিয়া ঠিক রাখতে ড্রাগন ফল সেবন করুন। এই ফলে উপস্থিত ফাইবার খাদ্য হজম করতে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যর মতো সমস্যা হতে দেয় না।
ড্রাগন ফলের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
আমরা এতোক্ষণ ধরে ড্রাগন ফলের অনেক সুবিধার কথা জানলাম। কিন্তু ড্রাগন ফলের কিছু সমস্যাও আছে যেগুলোর ব্যাপারেও আমাদের জানা দরকার।
অনেকের ড্রাগন ফল খাওয়ার কারণে ডায়রিয়ায় হয়।
ড্রাগন ফল খাওয়ার অনেক উপকার। তবে অধিক মাত্রায় এই ফল খেলে শরীরের পক্ষে ক্ষতিকারক হতে পারে।
ড্রাগন ফল খাওয়ার কারণে যদি আপনি কোনও ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যায় পড়েন তবে তাৎক্ষনিকভাবে ড্রাগন ফল খাওয়া বন্ধ করুন এবং নিকটস্থ কোনও সাধারণ চিকিৎসকের (General Physician ) সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
ড্রাগন ফলের চাষ পদ্ধতি
জমি নির্বাচন ও তৈরি
পানি জমে না এমন উঁচু ও মাঝারি উঁচু উর্বর জমি নির্বাচন করতে হবে এবং ২-৩ টি চাষ দিয়ে ভালোভাবে মই দিয়ে সমান করতে হবে।
রোপণ পদ্ধতি ও রোপণ সময়
সমতল ভূমিতে বর্গাকার বা ষড়ভূজাকার এবং পাহাড়ি ভূমিতে কন্টুর পদ্ধতিতে ড্রাগন ফলের কাটিং রোপণ করতে হবে। ড্রগন ফল রোপণের জন্য উপযোগী সময় হলো মধ্য এপ্রিল থেকে মধ্য অক্টোবর।
বংশবিস্তার
অঙ্গজ পদ্ধতি বা বীজের মাধ্যমে ড্রাগন ফলের বংশবিস্তার হয়ে থাকলেও মাতৃ গুণাগুণ বজায় রাখার জন্য অঙ্গজ পদ্ধতিতে অর্থাৎ কাটিংয়ের মাধ্যমে বংশবিস্তার করাই ভালো। কাটিংয়ের সফলতার হার প্রায় শতভাগ এবং ফল খুব দ্রুত আসে। কাটিং থেকে উৎপাদিত একটি গাছে ফল ধরতে ১২-১৮ মাস সময় লাগে।
অঙ্গজ পদ্ধতিতে চারা উৎপাদন
সাধারণত বয়স্ক এবং শক্ত শাখা ১ থেকে ১.৫ ফুট কেটে হালকা ছায়াতে বেলে দোআঁশ মাটিতে গোড়ার দিকের কাটা অংশ পুঁতে সহজেই চারা উৎপাদন করা যায়। তারপর ২০ থেকে ৩০ দিন পরে কাটিং এর গোড়া থেকে শিকড় বেরিয়ে আসবে। তখন এটি মাঠে লাগানোর উপযুক্ত হবে। তবে উপযুক্ত পরিবেশে ও প্রয়োজন অনুযায়ী কাটিংকৃত কলম সরাসরি মূল জমিতে লাগানো যায়।
প্রনিং ও ট্রেনিং
ড্রাগন ফলের গাছ খুব দ্রুত বাড়ে এবং মোটা শাখা তৈরি করে। একটি এক বছরের গাছ ৩০টি পর্যন্ত শাখা তৈরি করতে পারে এবং ৪ বছরের বয়সী একটি ড্রাগন ফলের গাছ ১৩০টি পর্যন্ত প্রশাখা তৈরি করতে পারে। তবে শাখা প্রশাখা উৎপাদন উপযুক্ত ট্রেনিং ও ব্যবস্থাপনার ওপর নির্ভর করে।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ১২ থেকে ১৮ মাস পর একটি গাছ ফল ধারণ করে। ফল সংগ্রহের ৪০ থেকে ৫০টি প্রধান শাখায় প্রত্যেকটি ১ বা ২টি সেকেন্ডারি শাখা অনুমোদন করা হয়। তবে এ ক্ষেত্রে টারশিয়ার ও কোয়ার্টারনারি প্রশাখাকে অনুমোদন করা হয় না। ট্রেনিং এবং প্রনিংয়ের কার্যক্রম দিনের মধ্যভাগে করাই ভালো। ট্রেনিং ও প্রনিং করার পর অবশ্যই যে কোনো ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করতে হবে।
গর্ত তৈরি ও চারা রোপণ
১.৫ মিটার x ১.৫ মিটার x ১ মিটার আকারের গর্ত করে তা রোদে খোলা রাখতে হবে। গর্ত তৈরির ২০-২৫ দিন পর প্রতি গর্তে ২৫-৩০ কেজি পচা গোবর , ২৫০ গ্রাম টিএসপি, ২৫০ গ্রাম এমওপি, ১৫০ গ্রাম জিপসাম এবং ৫০ গ্রাম জিংক সালফেট সার গর্তের মাটির সাথে ভালো করে মিশিয়ে গর্ত ভরাট করে দিতে হবে। প্রয়োজনে সেচ দিতে হবে। গর্ত ভরাটের ১০-১৫ দিন পর প্রতি গর্তে ৫০ সেমি দূরত্বে ৪ টি করে চারা সোজাভাবে মাঝখানে লাগাতে হবে। চারা রোপণের ১ মাস প থেকে ১ বছর পর্যন্ত প্রতি গর্তে ৩ মাস পর পর ১০০ গ্রাম করে ইউরিয়া প্রয়োগ করতে হবে।
ড্রাগন ফলের গাছের পরিচর্যা
আগাছা অপসারণ করে নিয়মিত সেচ প্রদান এবং প্রয়োজনে চারপাশে বেড়ার ব্যবস্থা করতে হবে। গাছ লতানো এবং ১.৫ থেকে ২.৫ মিটার লম্বা হওয়ায় সাপোর্টের জন্য ৪ টি চারার মাঝে ১টি সিমেন্টের ৪ মিটার লম্বা খুঁটি পুততে হবে। চারা বড় হলে খড়ের বা নারিকেলের রশি দিয়ে বেঁধে দিতে হবে যাতে কাণ্ড বের হলে খুতিকে আঁকড়ে ধরে গাছ সহজেই বাড়তে পারে। প্রতিটি খুঁটির মাথায় একটি করে মটর সাইকেলের পুরাতন টায়ার মোটা তারের সাহায্যে আটকিয়ে দিতে হবে। তারপর গাছের মাথা ও অন্যান্য ডগা টায়ারের ভেতর দিতে বাইরের দিকে ঝুলিয়ে দিতে হবে। কেননা এভাবে ঝুলন্ত ডগায় ফল বেশি ধরে ।
সার প্রয়োগ
গাছের বয়স বাড়ার সঙ্গে নিচের মতো করে সার দিতে হবে:
সেচ ব্যবস্থাপনা
ড্রাগন ফল খরা ও জলাবধ্যতা সহ্য করতে পারে না। তাই শুষ্ক মৌসুমে ১০-১৫ দিন পর পর সেচ দিতে হবে।এছাড়া ফলন্ত গাছে ৩ বার অর্থাৎ ফুল ফোটা অবস্থায় একবার, ফল মটর দানা অবস্থায় একবার এবং ১৫ দিন পর আরেকবার সেচ দিতে হবে।
রোগ ও বালাই ব্যবস্থাপনা
ফলে রোগ বালাই খুবই একটা চোখে পড়ে না। তাবে কখনো কখনো এ গাছে মূলপঁচা, কান্ড ও গোড়া পঁচা রোগ দেখা যায়।
মূলপচা
গোড়ায় অতিরিক্ত পানি জমে গেলে মূল পচে যায়। এ রোগ হলে মাটির ভেতরে গাছের মূল একটি দুটি করে পচতে পচতে গাছের সমস্ত মূল পচে যায়। গাছকে উপরের দিকে টান দিলে মূল ছাড়া শুধু কান্ড উঠে আসে। তবে এ থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে উঁচু জমিতে এ ফলের চাষ করা ভালো।
কান্ড ও গোড়া পচা রোগ
ছত্রাক অথবা ব্যাকটেরিয়া দ্বারা এ রোগ হতে পারে। এ রোগ হলে গাছের কান্ডে প্রথমে হলুদ রং এবং পরে কালো রং ধারণ করে এবং পরবর্তীতে ওই অংশে পচন শুরু হয় এবং পচার পরিমাণ বাড়তে থাকে। এ রোগ দমনের জন্য যে কোন ছত্রাকনাশক (বেভিস্টিন, রিডোমিল, থিওভিট ইত্যাদি) ২ গ্রাম প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রয়োগ করে সহজেই দমন করা যায়।
পোকামাকড়
ড্রাগন ফলের জন্য ক্ষতিকর পোকামাকড় খুব একটা চোখে পড়ে না, তবে মাঝে মাঝে এফিড ও মিলি বাগের আক্রমণ দেখা যায়। এফিডের বাচ্চা ও পূর্ণ বয়স্ক পোকা গাছের কচি শাখা ও পাতার রস চুষে খায়, ফলে আক্রান্ত গাছের কচি শাখা ও ডগার রং ফ্যাকাশে হয়ে যায় ও গাছ দুর্বল হয়ে পড়ে। এ পোকা ডগার উপর আঠাল রসের মতো মল ত্যাগ করে ফলে শুটিমোল্ড নামক কালো ছত্রাক রোগের সৃষ্টি হয়। এতে গাছের খাদ্য তৈরি ব্যাহত হয়। এতে ফুল ও ফল ধারণ কমে যায়। এ পোকা দমনে সুমিথিয়ন/ডেসিস/ম্যালাথিয়ন এসব কীটনাশক প্রতি ১০ লিটার পানিতে ২৫ মিলিলিটার বা ৫ কাপ ভালো ভাবে মিশিয়ে স্প্রে করে সহজেই এ রোগ দমন করা যায়।
ড্রাগন ফল সংগ্রহ ও ফলন
ড্রাগন ফলের কাটিং থেকে চারা রোপণের পর ১ থেকে ১.৫ বছর বয়সের মধ্যে ফল সংগ্রহ করা যায়। ফল যখন সম্পূর্ণ লাল রঙ ধারণ করে তখন সংগ্রহ করতে হবে। গাছে ফুল ফোটার মাত্র ৩৫-৪০ দিনের মধ্যেই ফল খাওয়ার উপযুক্ত হয়। বছরে ৫-৬টি পর্যায়ে ফল সংগ্রহ করা যায়। প্রথমত জুন-অক্টোবর, দ্বিতীয় ডিসেম্বর-জানুয়ারি।